আমি ইঞ্জিনিয়ার মানুষ হলেও বাংলাদেশের বর্তমান স্রোতে গা ভাসিয়ে এম,বি,এ, এর পেছনে দৌড়াচ্ছি। আজ ছিলো প্রিন্সিপ্যাল অব একাউন্টিং এর ক্লাশ। গত ক্লাশগুলো সহজ মনে হলেও আজকের অ্যাডজাস্টমেন্ট থিওরি মাথার ওপর দিয়েই যাচ্ছিলো। কিছুক্ষণ মনযোগ দিয়েও যখন বুঝতে ব্যর্থ হচ্ছিলাম তখন 'নাই কাজ তো খই ভাজ' এর শুরু। আমার ক্ষেত্রে এটা হল কিছু লেখবার চেষ্টা করলাম। আমি কাগজে-কলমে বাম-ঘেঁষা, সাম্যবাদ, কমিউনিজম, বিপ্লব-বিদ্রোহের স্বপ্ন দেখলেও বাস্তবে পুঁজিবাদের ছাত্র। আজকের লেখাটাও হয়ে গেলো সেই নিয়েই।
আমার সাম্যবাদ
আমি তো সাম্যবাদী মানুষ!
নিজের কিছুই নাই,
সবার তরেই চাই!
ওড়ে কমিউনিস্ট ফানুশ!
গাছতলাতে রোদ্দুর-পোড়া,
আর কাকভেজা হই।
উষ্ণ দখিণ হাওয়া
আর পাতায় ছাওয়া
ছোট্ট একটা ঘর।
হেথায় র'বে মানুষ জোড়া।
সবটাই মনের স্বপন...
আমার কেউই নাই,
সাম্যেরই গান গাই!
জাগে মনে লোভের বপন!
ঘর চাই! ঘর চাই!
নিজের তরে একটা ঘর!
দখিণা জান্লা র'বে,
কবাটও থাকবে হবে;
যেন যায় না কো বয়ে ঝড়!
অন্ধকারে খেলবে জোনাই
ঐ জান্লার ধারে।
হয় যেন খাল-পাড়ে!
মোর এমনই ঘর চাই!
যদি ঘরটা হত বা পাকা,
দেওয়াল হত লাল!
গায়ে বিপ্লবের শাল
চড়িয়ে মাওসেতুং আঁকা!
রাতে যদি ল্যাম্পশেড জ্বেলে
শীতল মেশিনে বসে
হত দ্রোহী-নক্সা কষে!
কতই না ভালো হত
আমি এমন ঘরটা পেলে!
রহিম-রাজু পায়না ভাত!
মুক্তিরই কথা ভাবি,
খুঁজি অর্থনীতি-চাবি!
কেটে চলে ভাবনার রাত...
ভেবে ভেবে হয়রান হই,
ভোরবেলা থামি আমি।
ঐ সুয্যি বুঝি হাসে!
ভাবনার দাঁড়ি টানি
কত বিপ্লবী সুবাসে!
আমি আর সাম্যবাদী নই!
শুরুয় রহিম-রাজু,
আমি শেষটা টানি আমাতে।
বদলে যে গেছি আমি,
বদলে গেলো সবটা।
ধীরে ধীরে যায় কমে
কমিউনিস্ট রবটা।
সাম্যবাদ আজ ম্লেচ্ছ
ফাঁদওলা পুঁজিবাদী পাতে!
০৫ জুন, ২০১৩
দেবাশিস্ মুখার্জি