আজকের আলোচনা শুরু করবো মাত্রা আর ছন্দ দিয়ে।
মাত্রা: বাংলা কবিতায় একটি স্বর উচ্চারণের নিম্নতম কালকে মাত্রা বলে। যেমন: হ্যাঁ, না, কি, বান্, ধান্ ইত্যাদি।
সকল অবস্থাতেই মুক্তস্বর একমাত্রার তাই এর হিসেবে কোন সমস্যা নেই কিন্তু বদ্ধ স্বর কখনো একমাত্রা আবার কখনো একাধিক মাত্রার। ছন্দ অনুযায়ী এই বদ্ধস্বরের মাত্রার হিসেব বদলে যায়! ধীরে ধীরে এগুলোও আসবে।
মুক্তস্বরের হিসেবে একমাত্রাকে '।' চিহ্ন দিয়ে আর বদ্ধস্বরকে '-' চিহ্ন দিয়ে প্রকাশ করা হয়।
বাংলা কবিতা মূলত তিন ধরণের ছন্দে লেখা হয়ে থাকে -
ক) স্বরবৃত্ত ছন্দ
খ) মাত্রাবৃত্ত ছন্দ
গ) অক্ষরবৃত্ত ছন্দ
স্বরবৃত্ত ছন্দ: স্বরবৃত্ত ছন্দে মুক্তস্বর ও বদ্ধস্বর দু'টোই একমাত্রা বহন করে। যেমন:
পর্ব: কবিতার প্রতিটি চরণে সমমাত্রার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশই হলো পর্ব। পঙ্ক্তির শেষের পর্বাংশকে অতিপর্ব বলা হয় সাধারণত যার মাত্রা সংখ্যা পর্বের মাত্রা সংখ্যা থেকে কম হয়ে থাকে। আর এ ধরনের পর্বাংশ পঙ্ক্তির শুরুতে থাকলে তাকে বলা হয় উপপর্ব।

এখানে চার মাত্রার চারটি পর্ব এবং দুই মাত্রার একটি অতিপর্ব দিয়ে পঙ্ক্তি গঠিত হয়েছে। সাথে সাথে লক্ষণীয় যে শামসুর রাহমান একটি পঙ্ক্তি ভেঙে দু’টি লাইন করেছেন। কিন্তু পর্ব সংখ্যা প্রতি দুই দুই লাইনে সমান রেখেছেন।

এখানে রবিঠাকুর প্রতি পঙ্ক্তিতে ৪ মাত্রার দু'টো পর্ব এবং ৮ মাত্রার একটি অতিপর্ব রেখেছেন।
আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করি।
সবশেষে আজকেও একটা দ্বাদশপদী দিলাম। আজকের এই কবিতা স্বরবৃত্তছন্দে ৪ + ৪ + ৪ এ লেখার চেষ্টা করেছি। আপনারা এটার বিশ্লেষণ করে এর ভুল-ত্রূটি ধরিয়ে দিলে খুব ভালো লাগবে।
উৎসাবলি:
১) নূতন ছন্দ পরিক্রমা - প্রবোধচন্দ্র সেন
২) বাংলা কবিতার ছন্দ - মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান
৩) বাংলা ছন্দের রীতি, রূপ ও বিকাশ - শাজাহান ঠাকুর
৪) হাসানআল আব্দুল্লাহ এর ব্লগ (মুক্তমনা)
মাত্রা: বাংলা কবিতায় একটি স্বর উচ্চারণের নিম্নতম কালকে মাত্রা বলে। যেমন: হ্যাঁ, না, কি, বান্, ধান্ ইত্যাদি।
সকল অবস্থাতেই মুক্তস্বর একমাত্রার তাই এর হিসেবে কোন সমস্যা নেই কিন্তু বদ্ধ স্বর কখনো একমাত্রা আবার কখনো একাধিক মাত্রার। ছন্দ অনুযায়ী এই বদ্ধস্বরের মাত্রার হিসেব বদলে যায়! ধীরে ধীরে এগুলোও আসবে।
মুক্তস্বরের হিসেবে একমাত্রাকে '।' চিহ্ন দিয়ে আর বদ্ধস্বরকে '-' চিহ্ন দিয়ে প্রকাশ করা হয়।
বাংলা কবিতা মূলত তিন ধরণের ছন্দে লেখা হয়ে থাকে -
ক) স্বরবৃত্ত ছন্দ
খ) মাত্রাবৃত্ত ছন্দ
গ) অক্ষরবৃত্ত ছন্দ
স্বরবৃত্ত ছন্দ: স্বরবৃত্ত ছন্দে মুক্তস্বর ও বদ্ধস্বর দু'টোই একমাত্রা বহন করে। যেমন:

পর্ব: কবিতার প্রতিটি চরণে সমমাত্রার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশই হলো পর্ব। পঙ্ক্তির শেষের পর্বাংশকে অতিপর্ব বলা হয় সাধারণত যার মাত্রা সংখ্যা পর্বের মাত্রা সংখ্যা থেকে কম হয়ে থাকে। আর এ ধরনের পর্বাংশ পঙ্ক্তির শুরুতে থাকলে তাকে বলা হয় উপপর্ব।
যখন ওরা অপিশে যায় কিংবা চালায়মাত্রা বিন্যাস:
তুমুল দোকানদারি
তখন আমি ঢেউ সাজানো নদীর বুকে
দিব্যি জমাই পাড়ি।
(যখন ওরা - শামসুর রাহমান)

এখানে চার মাত্রার চারটি পর্ব এবং দুই মাত্রার একটি অতিপর্ব দিয়ে পঙ্ক্তি গঠিত হয়েছে। সাথে সাথে লক্ষণীয় যে শামসুর রাহমান একটি পঙ্ক্তি ভেঙে দু’টি লাইন করেছেন। কিন্তু পর্ব সংখ্যা প্রতি দুই দুই লাইনে সমান রেখেছেন।
এটা কিছু অপূর্ব নয়, 'ঘটনা: সামান্য খুবই',মাত্রা বিন্যাস:
শঙ্কা যেথায় করো না কেউ সেইখানে হয় জাহাজ-ডুবি।
(বোঝাপড়া, ক্ষণিকা: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

এখানে রবিঠাকুর প্রতি পঙ্ক্তিতে ৪ মাত্রার দু'টো পর্ব এবং ৮ মাত্রার একটি অতিপর্ব রেখেছেন।
আজকের আলোচনা এখানেই শেষ করি।
সবশেষে আজকেও একটা দ্বাদশপদী দিলাম। আজকের এই কবিতা স্বরবৃত্তছন্দে ৪ + ৪ + ৪ এ লেখার চেষ্টা করেছি। আপনারা এটার বিশ্লেষণ করে এর ভুল-ত্রূটি ধরিয়ে দিলে খুব ভালো লাগবে।
বাংলাদেশ
পোড়া লাশের মাঝ থেকে দেশ ওঠে জেগে
এক বাংলাদেশ। ভালোবাসা আর আবেগে
ভেসে থাকে পৃথিবীর মাঝ সবিস্ময়ে!
আর শত্রুদল একে একে যাবে ক্ষয়ে!
সিংহ-পুরুষ এক মুজিবের প্রবারণে
বাঙাল, সাঁ'তাল, ওঁড়াওঁ, গারোর জাগরণে
একে একে ভেসে গেল সব শত্রুর বলঃ
পাকি আর ওর রাজাকার ভাই! হারামির দল!
আমার সোনার বাংলা মায়ের আছে কি ক্ষয়?
চিৎকার করে বল্, 'জয় বাংলা!', বল, 'বাংলার জয়!'
জন্ম আমার বাংলার বুকে, যেন মরি
এ মাটিতে। এ মোর স্বর্গ! এ মোর হরি!
১ জুন, ২০১২; ঢাকা
দেবাশিস্ মুখার্জি
উৎসাবলি:
১) নূতন ছন্দ পরিক্রমা - প্রবোধচন্দ্র সেন
২) বাংলা কবিতার ছন্দ - মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান
৩) বাংলা ছন্দের রীতি, রূপ ও বিকাশ - শাজাহান ঠাকুর
৪) হাসানআল আব্দুল্লাহ এর ব্লগ (মুক্তমনা)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন