শুক্রবার, ১১ নভেম্বর, ২০১১

সফেদ বেনসনে মোড়া ভালোবাসা


অশান্ত এ মন,
লাগে গায়ে শীতের পবন,
তবু আমি ঘামি দরদর,
এ হৃদয়ে বাজে শুধু মর্মর।

সেই চেনা পথে হাঁটি,
এই সেই চেনা মাটি,
শুধু তোমায়ই পায় শ্বাস,
নেই কোন মেটো বাস!

চারিদিকে চাই, দেখি তুমি নাই,
বাতাসে ওড়ে সফেদ বেনসনের ছাই।
একটা-দু'টা-তিনটা ফুড়োয়,
বাতাসটা তার ছাই উড়োয়।


হেঁটে চলি, পৌঁছি সেই পুকুর পাড়ে,
তোমায় নিয়ে সময় কাটে যেই ধারে।
আঁধার নামে ঐ আকাশে,
আর আযানের শব্দ ভাসে।


বেনসনের ধোঁয়ায় খোকার মশারা থাকে দূরে,
আর একটু একটু করে বুক যায় ভেঙ্গেচুড়ে।
ধোঁয়ায় ধূমায়িত তুমি আসো,
জড়িয়ে ধরে আমায় ভালোবাসো...


ভালোবাসা! সফেদ বেনসনে মোড়া!
ছ'নম্বরটা হাতে, মনে দেয় নাড়াঃ
"আমি ভাবি তুমি আর তুমি ভাবো রবি,
এই মন কবে ছোঁবে ঐ মনের ছবি??..."

"আমি ভাবি তুমি আর তুমি ভাবো রবি,
এই মন কবে ছোঁবে ঐ মনের ছবি??...
তবু আমি আশায় থাকি পাবো আমি তোমায়
আশা নিয়েই আছি বেঁচে, দিন চলে যায়..."

ভালোবাসা! সফেদ বেনসনে মোড়া!
আমার ভালোবাসায় দিবে কবে সাড়া??

বুধবার, ৯ নভেম্বর, ২০১১

কফিতা...





ও রে কফির পোড়া গন্ধ,
আমি যে তোরই প্রেমে অন্ধ।
নাকটা ডুবোই তোরই ধোঁয়ায়,
দেয় সাড়া মন তোরই ছোঁয়ায়,
ওঠে জেগে প্রতি রন্ধ্র।

মগের ভেতর শুধুই যে তুই,
দুধ-চিনি বাদ; একটু গরম পানি।
তোর ধোঁয়ার মাঝে প্রেমের হাতছানি,
দিয়ে সাড়া তোর হাতখানি ছুঁই।
তুইই আমার ভালোবাসা,
তুইই আমার রাণী।

সোমবার, ১০ অক্টোবর, ২০১১

শাড়ি...

আমি টুকটাক লেখালেখি করি। তবে বেশিরভাগ সময়েই সাহিত্য ঘরানার লেখাগুলো ঠিকমত পরিপক্বতা পায় না। আসলে লেখার গভীরতা বাড়ানোর জন্য অনেক বেশি পড়াশোনা করতে হয়। অন্যের লেখা পড়লে, বিশেষ করে ভালো মানের লেখা পড়লে লেখার গুণ, গভীরতা, ব্যপকতা নিশ্চিতভাবেই বাড়ে যদি পড়া লেখাগুলোর কিয়দংশও বোঝা সম্ভব হয়।

আমি আমার আলসেমির দরুন বই পড়াও ছেড়ে দিয়েছি। নানা ব্যস্ততায় ব্লগ পড়াটাও অনেক কমে গেছে। আজ এক বন্ধুর কাছ থেকে পড়ার জন্য একটা বই নিলাম। রাজনৈতিক ভাবে ওপার বাংলার (রাজনৈতিকভাবে দুই বাংলা যতই আলাদা হোক না কেন আমার মনে দুই বাংলা এখনো অভিন্নসত্তা) লেখকের। সুবোধ সরকারের কবিতার বই। এর আগে আমি কখনো সুবোধ সরকার পড়িনি। আমার বন্ধু, সাবিল কবিতাগুলো থেকে কিছু কবিতা আমাকে আবৃত্তি করে শোনালো। তার থেকে একটা কবিতা আমার মাথায় ঘুরছিলো।

বাসায় ফিরে আরো বেশ ক'বার পড়লাম। আমি বাকরুদ্ধ। এই না হল কবিতা! জীবনে এরকম একটা কবিতা লিখতে পারলে লেখালেখির পুরোটাই স্বার্থক। অনেক বেশি মর্মস্পর্শী সে কবিতা। একজন পুরুষ কবি এক হতভাগ্যা-অসহায়া নারীর করুণ চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন সে কবিতায়। আমি মনে মনে নিজেকে সেই নারীর জায়গায় বসানোর চেষ্টা করলাম। যদিও একজনের পক্ষে আরেকজনের দুঃখের পুরোটা কোনভাবেই বোঝা সম্ভব না, তারপর আমি একজন পুরুষ! এরপরও পড়তে পড়তে আমার চোখের কোণাটা ভিজে গেল।

কবিতাটা আপনাদের জন্য তুলে ধরছিঃ

শাড়ি
- সুবোধ সরকার

বিয়েতে একান্নটা শাড়ি পেয়েছিল মেয়েটা
অষ্টমঙ্গলায় ফিরে এসে আরো ছটা
এতো শাড়ি একসঙ্গে সে জীবনে দেখেনি।

আলমারির প্রথম থাকে সে রাখলো সব নীল শাড়িদের
হালকা নীল একটাকে জড়িয়ে ধরে বলল, তুই আমার আকাশ
দ্বিতীয় থাকে রাখলো সব গোলাপীদের
একটা গোলাপীকে জড়িয়ে সে বলল, তোর নাম অভিমান
তৃতীয় থাকে তিনটা ময়ূর, যেন তিন দিক থেকে ছুটে আসা সুখ
তেজপাতা রঙ যে শাড়িটার, তার নাম দিল বিষাদ।
সারাবছর সে শুধু শাড়ি উপহার পেল
এত শাড়ি কী করে এক জীবনে সে পরবে?

কিন্তু এক বছর যেতে না যেতে ঘটে গেল সেই ঘটনাটা
সব্ধের মুখে মেয়েটি বেরিয়েছিল স্বামীর সঙ্গে, চাইনিজ খেতে
কাপড়ে মুখ বাঁধা তিনিটি ছেলে এসে দাঁড়ালো
স্বামীর তলপেটে ঢুকে গেল বারো ইঞ্চি
ওপর থেকে নীচে। নীচে নেমে ডানদিকে।
পড়ে রইলো খাবার, চিলি ফিশ থেকে তখনো ধোঁয়া উঠছে।
এর নাম রাজনীতি বলেছিল পাড়ার লোকেরা।

বিয়েতে একান্নটা শাড়ি পেয়েছিল মেয়েটা
অষ্টমঙ্গলায় ফিরে এসে আরো ছটা
একদিন দুপুরে, শাশুড়ি ঘুমিয়ে, সমস্ত শাড়ি বের করে
ছ'তলার বারান্দা থেকেউড়িয়ে দিল নীচের পৃথিবীতে।
শাশুড়ি পরিয়ে দিয়েছেন তাঁকে সাদা থান
উনিশ বছরের একটা মেয়ে, সে একা।

কিন্তু এই থানও এক ঝটকায় খুলে নিল তিনজন, পাড়ার মোড়ে
একটি সদ্য নগ্ন বিধবা মেয়ে দৌড়াচ্ছে আর চিৎকার করছে, বাঁচাও
পেছনে তিনজন, সে কি উল্লাশ, নির্বাক পাড়ার লোকেরা।

বিয়েতে একান্নটা শাড়ি পেয়েছিল মেয়েটা।


কবিতাটার ভাষা যতটা সহজ ঠিক ততটাই কঠিন এর বক্তব্য। এর ঘটনাটা কঠিনভাবে বুকের বাম দিকে আঘাত করে। মস্তিষ্কে আঘাত করে, এবং সে আঘাত পৌনঃপুনিকভাবে চলতেই থাকে। আমি সে আঘাত থেকে মুক্তি পাই নি। এলোমেলো ভাবনারা আমাকে আরো কিছুদূর সামনে টেনে নিয়ে গেছে। তাইই তুলে ধরলামঃ

শাড়ি
- দেবাশিস্‌ মুখার্জি

তিনজন দৌড়াচ্ছে, দৌড়াচ্ছে সেই নারীর পেছনে
যে নারীর সিঁথিতে গতকালও সিঁদুর ছিল
নারীদেহ খেতে অনেক মজা, তাই এ সুযোগ ছাড়বে কেন?
সাদা থান কেড়ে নিয়ে হাত বাড়ায় উলঙ্গ বক্ষে
একে একে রক্তাত করে তোলে সারাটা দেহ
নির্বাক পাড়াবাসীর গোচরেই চলে তিন পাষণ্ডের উপভোগ।

তিনজনের পালাবদলে রাতটা পার হয়না সে মেয়ের
ভোরের আলো ফোঁটার আগেই তার জীবন আলোর অস্ত ঘটে
সকাল বেলা হাজির হয় কর্তব্য পরায়ন পুলিশেরা,
একে ওকে জিজ্ঞাস করে, কে এই নারী, ধর্ষিতা নারী!
নির্বাকেরা নির্বাক রয়ে যায়, পুলিশ লাশ নিয়ে ধায়।

আধখাওয়া লাশটার কাটাছেঁড়া চলে, সবশেষে সেলাই,
এর পর মেয়েটার উলঙ্গ দেহে নতুন কাপড় ওঠে, লাশের সাদা কাপড়
পুলিশ লাশটাকে শাশুড়ির কাছে দিয়ে আসে
কিন্তু সে তো একে দিবেনা জায়গা, এ যে অপয়া নারী
একে একে সব নির্বাকেরা সবাক হয়ে ওঠে, বলে, ঠিক ঠিক
সত্যিই ও অপয়া তাই বিয়ের বছর না পেরুতেই স্বামীকে খেলো,
আর কোন ভালো মেয়েকে কি কেউ এভাবে খায়!

এত শাড়ির মালিক হয়েও একটা শাড়ি জোটে না সে মেয়ের
একটা সাদা থানে চিতায় নিতেও নারাজ বুড়ো শাশুড়ি,
কারণ ওর জন্যই যে ওর খোকা মরেছে!
সরকারি কাপড় গায়ে ইলেক্ট্রিক চিতা জলে গঙ্গার ধারে,
কাপড়ের ছায়ারা এখনো ওড়ে রাতের আধাঁরে।


শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০১১

মাদকতা!


তুই খেয়ে চল স্কচ, রাম, ভদকা,
আর আমি খাবো তোর মাদকতা।
মাদকতা মাখা ঐ চোখ দুটোতে
আমি যাই চলে প্রেমের শুরুতে...

নতুনের শুরু, হারানো কিছু ভুলে
নাকটা গুঁজি তোর ঐ ছাড়া চুলে,
মাদকতার ঘ্রাণে পাগল এ আমি,
তোকে ঘিরেই ফের পাগলামি...


কোলে নিয়ে চলি ঐ ছাদের 'পরে,
তোর খোলা চুল ওড়ে ধুলি ঝড়ে,
এরপর নামে বৃষ্টি, কাঁদে আকাশ,
তুই আর আমি হই ভেজা কাক...

কাঁপছি, কোন এক শীতল নিশীথে,
ছাদের 'পরে, বসে ঐ ঠাণ্ডা মেঝেতে,
কালপুরুষ খোঁজে দুইজোড়া চোখ,
ভুলে যেতে চায় পেছনের শোক...


তবু থাকে জল চোখের কোণে
আর পুরোনোরা রয় অবচেতনে
মেনি আর হুলো রাখে কাঁধে কাঁধ
ভালোবাসতে জাগে বড় সাধ...

তবু মনে থাকে ভয় পাথর হবার
হবে কি পাথর দুজনায় আবার??
.......................................


১২ আগস্ট, ২০১১; ঢাকা
দেবাশিস্‌ মুখার্জি

সোমবার, ১ আগস্ট, ২০১১

ইন্দো-বাংলা সম্পর্ক: সীমান্ত - ০১: ইন্দো-বাংলা যুদ্ধ!!

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ ছাগু ও ভাদারা নিরাপদ দূরত্বে থাকুন। আসলেই গদাম!!
 

অনেকদিন পর এই সিরিজটায় হাত দিলাম। যাদের পড়া হয় নি কিংবা যারা সময়ের স্রোতে ভুলে গিয়েছেন তাদের জন্য এই সিরিজের আগের পর্বের লিঙ্কগুলো তুলে ধরলামঃ

অকৃত্রিম বন্ধু ভারত - ০১ : নদ-নদী - ০১ : ভারতের তিস্তা-মহানন্দা শোষণ
 
অকৃত্রিম বন্ধু ভারত - ০১ : নদ-নদী - ০২ : গঙ্গা-পদ্মা দরকষাকষি ও আমার প্রস্তাবনা

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতায় প্রতিবেশী ভারতের অবদান অনস্বীকার্য। ভারতের সাহায্য ছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতাটা অসম্ভব না হলেও এতটা সহজে হত না। ৩০ লাখ প্রাণ আর ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের পরেও বলবো আমরা খুব কম সময়েই আমাদের স্বাধীনতা পেয়েছি। তবে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর থেকেই নানা টানাপোড়েনে বন্ধুত্বের পথটা মসৃণ হয় নি। ভারত বরং তার দাদাগিরিই অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশ-ভারতের মাঝে যদিও কোন যুদ্ধ হয় নি, তবে যুদ্ধের কাছাকাছি উত্তপ্ত অবস্থা ঠিকই তৈরি হয়েছে, যদিও তার পরিমাণ হাতে গুণে কয়েকবার। ঐ ঘটনাটাকে যুদ্ধ না বলে সংঘর্ষ বলাই শ্রেয় (তবু কেন শিরোনামে যুদ্ধ শব্দটা ব্যবহার করেছি তা পুরো পোস্ট পড়লেই জানতে পারবেন)। ইন্দো-বাংলার সেই সংঘর্ষ নিয়েই আজকের পর্ব লিখলাম।

ভেতরের ঘটনা যাই হোক, বাহ্যিক ভাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারকেই 'ভারতের দালাল' অপবাদ সহ্য করতে হয়। আর এই রটনা রটানোর গুরু দায়িত্ব পালন করে বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলগুলো, এবং দেশের জনসংখ্যার বেশ বড় একটা অংশ তা বিশ্বাসও করে। কিন্তু এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল আওয়ামী সরকারের সময়েই এবং তখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শেখ হাসিনা!
 
কথা না বাড়িয়ে মূল কথায় যাই। ঘটনার সময়কাল ২০০১ সালের ১৬ - ২০ এপ্রিল এবং ঘটনাস্থল বাংলাদেশ আর ভারতের আসাম ও মেঘালয় সীমান্ত। ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া যায়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয় যে ওপারের বিএসএফ আমাদের কুড়িগ্রাম এর রৌমারি সীমান্তে টহলরত বিডিআরকে হঠাৎ করেই আক্রমণ করে আর তাই বাংলাদেশ আর্মির সদস্যরা ওদের সাহায্যে এগিয়ে আসে। আর বিএসএফ তরফ থেকে জানানো হয় বিডিআর বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করে এক গ্রাম দখল করার চেষ্টা করে যা মূলত ভারতের জায়গা!!






এই সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশ বিডিআর এর ২ জন সদস্য মারা যান। আর বিএসএফ এর ১৬ জন সদস্য মারা যান। বাংলাদেশ বিডিআর শুরুতেই লাশ হস্তান্তর করতে রাজি হয় নি। পরে তারা তা করতে বাধ্য হয়। ভারত সরকার এর তরফ থেকে দাবি করা হয় যে বিএসএফ সদস্যদের হয় অত্যচার করে মারা হয়েছে কিংবা হত্যার পর তাদের লাশ বিকৃত করা হয়েছে। আর এর উত্তরে বিডিআর বলেছে ওদের লাশগুলোতে গরমে পচন ধরেছে। ভারত সরকার বলেছে যুদ্ধকালীন অবস্থায় বিপরীত পক্ষের সেনাদের লাশ বিকৃত করা জেনেভা কনভেনশন বিরোধী। আর দুই প্যরামিলিটারি বাহিনীর সংঘর্ষে বাংলাদেশের সেনার হস্তক্ষেপ নিয়মবিরুদ্ধ। ভারত জাতিসংঘের কাছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের বিচারও দিতে চেয়েছিল। পরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারো বাজপেয়ীর আলাপচারিতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।


স্বল্প সময়ের এই যুদ্ধে ফলাফল হল 'Status quo ante bellum', যার মানে যুদ্ধের আগের সীমানতে ফিরে যাওয়া। এর দুদিন বাদেই বিএসএফ তথা ভারত দাবী করে যে বাংলাদেশ ঐ সীমান্তে তার সেনা বাড়াচ্ছে এবং তা নাকি ২০০০০ এরও বেশি!! বাংলাদেশ সরকার অথা বিডিআর এর তরফ থেকে তৎক্ষণাৎ জবাব দেওয়া হয় ওখানে তাদের রুটিন ওয়ার্ক চলছে, আর বাংলাদেশের কোথাও কত সেনা থাকবে তা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার!!



বাংলাদেশ সরকারের তরফ থেকে ঐ সীমান্তে থাকা কোন বিডিআর সদস্য কিংবা সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে কোর্ট মার্শাল কিংবা সান্সপেন্ড করার মত কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে বাংলাদেশে রাজনীতিতে অনেকেই এটা নিয়ে মিথ্যা কাহিনী প্রচার করে ফায়দা লুটার চেষ্টা করেছে।

 

জাতীয় নির্বাচনের আগ দিয়ে এই ঘটনা আওয়ামী সরকারকে চরম বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে। লীগ সরকার উভয় সংকটে পরে যায়। এই ঘটনায় যদি সত্যিই বাংলাদেশ আর্মির ঐ মেজরের দোষ হয়ে থাকে তবে তার পেছনে বিএনপি-জামায়াত জোটের ইন্ধন থাকলে অবাক হব না!!
 

সবশেষে কিছু কথা না বললেই না। ঐটাও আমাদের সেনা, আমাদের বিডিআর ছিল। আর এখন যারা সীমান্ত পাহাড়া দিচ্ছেন তারাও তাই (যদিও বিডিআর এর নাম বদলে বিজিবি হয়েছে), তখনও যিনি প্রধানমন্ত্রী চিলেন, এখনও তিনিই প্রধানমন্ত্রী আছেন। কিন্তু এখন আমাদের সীমান্তে কী ঘটে চলছে??!! কোন এক অজানা জাদুবলে (!!!) আমাদের বিজিবি সদস্যদের হাতে চুড়ি পরিয়ে রাখা হয়েছে!!!

শুক্রবার, ১ জুলাই, ২০১১

সব নষ্টদের দখলে!! — এই বলেই কি নিজেদের মিছে সান্ত্বনা দিবো??

আমাদের দেশের বেলায় সবচেয়ে প্রযোজ্য কথা হল -

অদ্ভুত উটের দেশে চলছে দেশ এক!!


দেশের সর্বত্র চলছে নষ্টদের রাজত্ব। একজন লোককে পশুর মতন জবাই করা কোন ব্যাপার না আজ। ধর্মের নামে এক শিশুকে/নারীকে বেত/পাথর ছুড়ে মারার ঘটনাও ঘটে চলছে। দেশের প্রতিকোণায় রাহেলা-সালেহা-জরিনা-পূর্ণিমারা তো অত্যাচারিতই, ঢাবির শিক্ষিকাও আজ নির্যাতিত। সীমা চৌধুরী কিংবা ইয়াসমীনেরা রক্ষক পুলিশের হাতেই ধর্ষিতা হন। ন্যায়ের প্রতীক র‍্যাব ভাইয়েরাই কোন কারণ ছাড়াই লিমনকে করেছে পঙ্গু। দেশের রক্ষক সেনা তারাও দেশের পাহাড়িদের দমন করে। সেখানেও চলে মানুষ হত্যা, নারী শিকারের মতন ঘটনা।

আমাদের বর্তমান সরকার, এর আগের সরকারেরা মিলে তামশা খেলছেন। তাদের খেয়াল-খুশি মতন দেশের সর্বোচ্চ দলিল নিয়ে কাটা-ছেঁড়ার খেলায় মেতে উঠছেন। রাষ্ট্রেরও নাকি ধর্ম থাকে!! সংবিধানে অবশ্যই এটা লেখা থাকতে পারে যে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলমান। তাই বলে রাষ্ট্রও কি মুসলামান নাকি?? রাষ্ট্রের কি সুন্নতে খৎনা হয়েছে?? রাষ্ট্র কি নামজ পড়ে, হজ্জ্ব করে?? নাকি ধর্ম আজ খেলনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে??

রাষ্ট্র একইসাথে ধর্ম নিরপেক্ষ থাকবে কিন্তু সকল কাজ শুরু করবে পরম করূণাময় আল্লাহর নামে। এটা কীভাবে সম্ভব??

এই নতুন সংশোধনীতে আদিবাসী ও ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আবার এর সাথে এও বলা হয়েছে রাষ্ট্রের সকলের জাতীয়তা বাঙালি, দেশীয় পরিচয় হিসবে বাংলাদেশি লেখা হবে। এটা কীভাবে সম্ভব??

বিএনপির আমলে বড়পুকুরিয়ায় যখন সকলে আন্দোলনে ব্যস্ত, কেউ উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা খনন করতে দিবেন না, তখন এই লীগই তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল। আজ তারাই এশিয়া এনার্জিকে কাজ পাইয়ে দিতে বদ্ধ-পরিপক। দেশের গ্যাস বাইরে চালান করার জন্য একটা চুক্তি হয়েছে। সরকারের দাবি দেশের স্বার্থ নিশ্চিত করা হয়েছে। যদি তাইই করা হয় তবে সেই চুক্তি প্রকাশ করা যাবে না কেন??

ট্রানজিটের মুলো ঝুললো আমাদের নাকের ডগায়। আমাদের নাকি বছরে ৭০০০ কোটি টাকা আয় হবে। আর এখন তো দেখা যাচ্ছে ৭০০০ কোটি পয়সা হবারও সম্ভাবনা নাই। তাহলে এত টাকা ঋণ নেওয়া হল কার স্বার্থে??

এরকম আরো কত কী আছে তা বলে শেষ করা সম্ভব না। একেবারে মাথায় যতটুকু আসলো তাই লিখলাম।

আমরা দেখি, কষ্ট পাই। নিজেদের মাঝে কষ্ট পাওয়ার ব্যাপারটা আদান-প্রদান করি। ব্লগে পোস্ট দেই। ব্লগীয় প্রতিবাদ করি। ছড়া-কবিতা লেখি। নিজেদের মাঝে তর্ক-বিতর্কও করি। কারণ আমাদের দৌড় বোধহয় এতটুকুই। আর সর্বোচ্চ ব্যাপার হল - এটা প্রকাশ করা যে সব নষ্টদের দখলে চলে গেছে। এটা শুধু একজন মানুষের কথা না। হতাশা থেকে অনেকেই এই কথা বলেন। কখনো কখনো আমি নিজেও বলি। এই বলে আমরা এড়িয়ে যাই কিংবা নিজেদের অপারগতায় নিজেকেই মিছে সান্ত্বনা দেই। একটা ঘটনার কিছুদিন পরেই সব ভুলে যাই কিংবা সেই কষ্টটা মনের এক কোণায় লুকিয়ে পরে। নতুন কোন ঘটনার অপেক্ষায় থাকি। নতুন করে কষ্ট করি, কষ্ট পাওয়ার ব্যাপারটাকে প্রকাশ করি কিংবা নীরবে সয়ে যাই। এভাবেই দিন চলে যাচ্ছে। সব কিছু আরো বেশি করে নষ্টদের দখলে চলে যাচ্ছে।

এভাবে সব নষ্টদের দখলে চলে গিয়েছে বলে নিজেদের আর কত মিছে সান্ত্বনা দিবো?? এভাবেই নিজেরা নিজেদের রক্ষা করছি না বরং শেষ করে দিচ্ছি একটু একটু করে।কিন্ত্য আর কত??

চলেন রাস্তায় না্মি, বাঙালি জাতিকে এইসব দোষ থেকে দায়মুক্ত করতে যুদ্ধে নামি। এতে হয়তো আমি মরবো, আপনি মরবেন, আমার বাবা-মা সন্তান হারা হবে, আপনার বাবা-মাও হবে। আমার ছেলে-মেয়ে পিতৃহারা হবে, আপনার ছেলে-মেয়েও হবে। কিন্তু তাতে তো দেশের কোটি সন্তানের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত হবে। কারো দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না। আমাদের মাঝেই একজন শেখ মুজিব, একজন তাজউদ্দিন, একজন মতিউর রহমান, একজন রুহুল আমীন, একজন আসাদ, একজন নূর হোসেন লুকিয়ে আছে। একে বেড় করে আনতে হবে। করতে হবে নিজেদের বাঁচাতে, দেশকে বাঁচাতে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে।

বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন, ২০১১

গোপন ক্যামেরার নজরদারি থেকে বাঁচার উপায় কি জানা আছে??

কিছু ওয়েব-সাইট আর ফেইসবুকের কল্যাণে লাখো মানুষের কাছে একটা তথ্য পৌঁছে গেছে যে সেল ফোন ব্যবহার করে গোপন ক্যামেরা সনাক্ত করা সম্ভব। ঐখানে যেভাবে সনাক্তকরণের কথা বলা হয়েছে সেটা টেলিকম এ পড়াশোনা করা একজন হিসেবে আমাকে বেশ ভাবালো। সেই থেকে আমি, আমার বন্ধু পার্থ আর আবরার মিলে এই লেখাটা দাঁড় করালাম। আশাকরি অনেকের কাজে লাগবে।

ঐ লেখাগুলোতে দেখানো হচ্ছে যে আরএফ ফ্রিকোয়েন্সি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত তারবিহীন ক্যামেরা্র কারণে সেলফোন থেকে ফোন করা যায় না।

ব্যবহৃত তারবিহীন গোপন ক্যামেরাগুলোর অধিকাংশতেই ক্ষেত্রেই ২.৪-২.৫ গিগা হার্জের আর এফ সিগনাল ব্যবহার করা হয় যা সাধারণ সেলফোনের মাধ্যমে সনাক্ত করা সম্ভব হবার কথা না।

বাংলাদেশে (এবং বিশ্বের অধিকাংশ দেশে) প্রচলিত সেলফোনগুলো GSM-900 এবং GSM-1800 ব্যবহৃত হয়। GSM-900 এর ক্ষেত্রে ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডঃ সেলফোন থেকে বেইজ-স্টেশনে পাঠাতে ৮৯০-৯১৫ মেগা হার্জ আর বেইজ-স্টেশন থেকে সেলফোনে ডাটা গ্রহণ করার সময় ৯৩৫-৯১৫ মেগা হার্জ। অন্যদিকে GSM-1800 এর ক্ষেত্রে ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ডঃ সেলফোন থেকে বেইজ-স্টেশনে পাঠাতে ১৭১০-১৭৮৫ মেগা হার্জ আর বেইজ-স্টেশন থেকে সেলফোনে ডাটা গ্রহণ করার সময় ১৮০৫-১৮৮০ মেগা হার্জ।

ফলে গোপন ক্যামেরার ফ্রিকোন্সির জন্য সেলফোনের ফ্রিকোয়েন্সি ব্লক হয়ে যাওয়া তো দূরের কথা, খুব একটা ইন্টারফেয়ারেন্সেরও সুযোগ নেই। তাই ঐভাবে সেলফোন দিয়ে আরএফ ফ্রিকোয়েন্সি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত গোপন ক্যামেরা সনাক্ত করা সম্ভব না।

এভাবে যেখানে সেখানে গোপন ক্যামেরাগুলো কেন বসানো হয়?? কিছু ক্ষেত্রে নিরাপত্তা রক্ষার্থে এভাবে নজরদারি করা হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব গোপন ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে খারাপ উদ্দেশ্যে। তাই এগুলো বসানো হয়ে থাকে মেয়েদের বাথরুমে, ট্রায়াল রুমে, হোটেল, এমনকি কখনো কখনো লোকজনের বাসাতেও। মূল উদ্দেশ্য মেয়েদের শরীর আর নারী-পুরুষের অন্তরঙ্গ দৃশ্যগুলো ধারণকরা, সেগুলো নিয়ে কাউকে হেয় করা, ব্যবসা করা।

গুগলে ‘victim by hidden camera’ লিখে খোঁজ করলে তৎক্ষণাৎ পাওয়া যাবে ৩৬ লাখ ওয়েব-সাইট লিঙ্ক, ৩৬৪ টি ভিডিও এর লিঙ্ক। আর ‘hidden camera in girls toilet’ লিখে খোঁজ করলে পাওয়া যাবে ৩৭ লাখ ৪০ হাজার ওয়েব-সাইট লিঙ্ক, ২৫৪ টি ভিডিও এর লিঙ্ক। এর থেকেই গোপন ক্যামেরার উদ্দেশ্য সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়।


ছবি - আরএফ ক্যামেরা ও এর রিসিভার

অনেক ধরণের ক্যামেরা আছে যা এসব কাজে ব্যবহৃত হয়। আগেকার দিনের ক্যামেরাগুলোর আকার বড় ছিল বলে অনেক সহজেই তা ধরা যেত। কিন্তু আজকাল ইলেকট্রনিক্স এর বিপ্লবে এদের আকার এত ছোট হয়ে গেছে যে সহজেই সনাক্ত করা সম্ভব না। তার উপর এখনকার এই ক্যামেরাগুলো সাধারণত তারবিহীন হয়ে থাকে এবং আকার এত বেশি ছোট হয় যে অনেকসময় খালি চোখে এদের অস্তিত্ত্ব নির্ণয় করা অসম্ভব।


ছবি - অতিক্ষুদ্র ক্যামেরা যা চোখে পরা খুব কঠিন

এবার একটু জেনে নিই যে কীভাবে আপনি আক্রান্ত হতে পারেন আর এর থেকে প্রতিকারে উপায়ই বা কী –

১) অনেক সময় বিশেষ কারো প্রতি নজর রাখতে কারো বাসাতেই গোপন ক্যামেরা বসাতে পারে। সাংবাদিকেরা সেলিব্রেটিদের বাসায় এই কাজ করতে পারে, ব্যবসায়িক কিংবা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কাউকে হেয় করতেও এই কাজ করতে পারে। আবার অনেক সময় সন্দিহান স্বামী/স্ত্রী বাসাতে বসে তার স্ত্রী/স্বামী কী করছে তা জানার জন্যো করে থাকতে পারে।

এ কাজের জন্য ক্যামেরা বাসার যেকোন জায়গাতেই বসানো হতে পারে। তাই সোফার কোণা, ঘড়ি, টেলিভিশন, ফ্যান এর মতন জায়গাও সন্দেহের বাইরে না। এসব জায়গাতে চোখে পরার মতন কালো দাগ দেখলেই তা পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত।


ছবি - হয়তো এভাবেই আপনা্র উপর লক্ষ রাখা হচ্ছে

বাসার সব কিছু ঠিক জায়গাতে আছে কিনা কিংবা নতুন কিছু দেখা যাচ্ছে কিনা তাও দেখে নেওয়া উচিত। অনেকে অভিনন্দন জানাতে ফুলের বুকির মাঝেও ছোট্ট একটা ক্যামেরা লুকিয়ে রাখতে পারে। তাই সাবধান!!

ঘরের বাতি নিভেয়ে এলইডি থেকে নির্গত হয় এমন ক্ষুদ্র লাল সবুজ আলো খুঁজে দেখা উচিত। বেশিরভাগ ক্যামেরার মাইক্রফোনের পাওয়ার অন করার পরপরই পাওয়ার অন ইনডিকেটর বাতি জ্বলে ওঠে। অনেকে ক্যামেরা স্থাপন করার সময় এই ফিচার বন্ধ করতে ভুলে যায়। এতে সহজে অন্ধকার জায়গায় ক্যামেরা সনাক্ত করা যায়। সাথে রুমে থাকা আয়না এবং জানালার কাঁচ গুলো ফ্ল্যাশ লাইট দিয়ে চেক করে নেয়া উচিত। সম্ভব হলে কিছু দিয়ে স্বচ্ছ কাঁচ ঢেকে দেয়া উচিত।

অনেক ক্যামেরা আছে মোশন সেন্সিটিভ। যখন ক্যামেরা ভিডিও ধারণ করে তখন এর থেকে হালকা শব্দ নির্গত হয়। তাই সতর্কতার সাথে খেয়াল করে দেখা দরকার যে কোন শব্দ পাওয়া যাচ্ছে কীনা।

২) গেষ্ট হাউস বা আবাসিক হোটেলে ওঠার আগে যদি সম্ভব হয় সাথে একটি আরএফ সিগনাল ডিটেক্টর (RF signal detector) বা ক্যামেরা ডিটেক্টর সাথে কিনে রাখতে পারেন। এটি আকারে ছোট বহন করতে সুবিধা এবং খুব বেশি দামিও না। আরএফ সিগনাল ডিটেক্টর দিয়ে সম্পূর্ণ সার্চ করা যায় এবং কোন ধরনের বিশেষ সিগনাল সনাক্ত হলেই ডিটেক্টর সিগনাল দিয়ে সতর্ক করে দিবে।


ছবি - হোটেলে এভাবেই নজর রাখা হয়

কিছু কিছু হোটেলে ডুয়েল মিরর বসানো থাকে। ডুয়েল মিররের উল্টো পাশ থেকে আয়নার এপাশের সব কিছুই পরিষ্কার দেখায় যায় সাধারণ কাঁচের মতো। কিন্তু এপাশ থেকে দেখলে এটাকে একটা সাধারণ আয়না ছাড়া কিছুই মনে হবে না। অনেক গেস্ট হাউসে এই ডুয়েল মিররের উল্টোপাশে ক্যামেরা বসিয়ে কাপলদের ক্লিপ রেকর্ড করা হয়। তাই হোটলে বা গেষ্ট হাউসে থাকা আয়নাগুলো সঠিকভাবে চেক করে নেয়া উচিত।

আয়নার উপর একটা আঙ্গুল রাখুন। আপনার আঙ্গুল আর আয়নায় আঙ্গুলের প্রতিবিম্বের মাঝখানে যদি কোনো ফাঁক না থাকে (মানে দুটো আঙ্গুলের মাথা যদি একেবারে একটার সাথে আরেকটা লেগে থাকে) তাহলে বুঝবেন এটা ডুয়েল মিরর। আর যদি মূল আঙ্গুল এবং আয়নার আঙ্গুলের মাঝে একটু ফাঁক থাকে (মূলত আয়নার থিকনেসের সমান) তাহলে বুঝবেন এটা একটা সাধারণ আয়না।

৩) মহিলারা যারা জিমে যান তাদেরকে জিমের ভিতরে বিভিন্ন জায়গায় এবং ইন্সট্রুমেন্ট ব্যবহারের আগে সঠিকভাবে চেক করে নেয়া উচিত। আশেপাশে পরে থাকা জিম ব্যাগগুলো চেক করে নিলে ভাল হয়। কারন আজকাল জিম ব্যাগ নামক হিডেন ক্যামেরা বাজারে এসেছে। এতে অতি ক্ষুদ্র ক্যামেরা লাগানো থাকে।

তাছাড়া মেয়েরা যখন কাপড় কিনতে গিয়ে ট্রায়াল রুমে কাপড় বদলে দেখেন কিংবা বাইরের কোথাও অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের টয়লেটে যান তখন সে জায়গাটি খুব ভালো করে দেখে নেওয়া প্রয়োজন। চারদিকে চোখে লাগার মতন কিছু দেখা যায় কিনা, কোন ছোট কালো কিছু দেখা যায় কিনা। সাথে কাপড় বদলের পূর্বে ট্রায়াল রুমের আয়নাটিও পরীক্ষা করে দেখা প্রয়োজন।


ছবি - ট্রায়াল রুমে মেয়েদের শরীর ধারণের অপকৌশল

৪) বর্তমান টিনেজারদের মাঝে সাইবার ক্যাফেতে বসে মেইক-আউট করার প্রবণতাও দেখা যায়। অনেক সাইবার ক্যাফের লোকেরা সেখানে গোপন ক্যামেরা বসিয়ে রাখেন এবং অন্তরঙ্গ মুহূর্তগুলো ধারণ করে ওয়েব-সাইটে ছেড়ে দেয় কিংবা ব্যাক্মেইলিং এর কি হিসেবে ব্যবহার করে। তাই টিনেজারদের এই ব্যাপারে খুবই সচেতন থাকা উচিত।

বর্তমান সময়ে প্রযুক্তি এতটা এতটা এগিয়ে যাচ্ছে যে ক্যামেরাগুলো দিনকে দিন সনাক্ত করা কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে উঠছে। তাই সকলেরই উচিত সাবধানে থাকা। পার্ক কিংবা রেস্টুরেন্টে নিজেদের সংযত রাখা এবং নিজের পোষাক ঠিক আছে কিনা সেইদিকে খেয়াল রাখা। অপরিচিত কাউকে ছবি তুলতে দেওয়া উচিত না। ফেইসবুকে নিজের ছবি গুলো সঠিকভাবে প্রাইভেসি দিয়ে সংরক্ষণ করা উচিত।

গোপন ক্যমেরার মাধ্যমে কারো উপর নজর রাখা দণ্ডনীয় অপরাধ। পশ্চিমা দেশগুলো এসব ব্যাপারে অনেক সচেতন হলেও আমাদের মতন দেশে আইন থাকলেও সে আইনের কোন প্রকার প্রয়োগ নেই। তাই নিজের সম্মান বাঁচাতে নিজেকেই যথাসম্ভব সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

একজন কবির গাজী লাশ হয়ে গেল...

আমি বরাবরই একটু বোকা। তাই আমার করার ক্ষমতা খুবই সীমিত জেনেও সেই অক্ষমতা থেকে কষ্ট পাই। আমার অক্ষমতা আমি বাংলাদেশের জন্য কিছু করতে পারছি না, আমার অক্ষমতা আমি দেশের মানুষের জন্য কিছু করতে পারছি না, আমি একজন কবির গাজীকে বাঁচাতে পারিনা, আমি একজন লিমনের পা ফিরিয়ে দিতে পারি না, একজন ইয়াসমীন-পূর্ণিমা-সীমা-চৌধুরীকে বাঁচাতে পারি না কিংবা পারিনা রুমানাদের রক্ষা করতে। আমার সর্বোচ্চ ক্ষমতা নিজেই কষ্ট পাওয়া।

কাল রাতে জাগো ভাইয়ের পোস্টে আদিল ভাইয়ের লিঙ্কের লেখায় গিয়ে লেখাটা বার বার পড়ছিলাম। অনেক কষ্ট লাগছিলো। তারপরও পরছিলাম। আমাদের দেশেই এসব হচ্ছে, আর আমরা নীরব সাক্ষী। তবে এই কষ্ট পাওয়া আমার কর্তব্যের মাঝে পরে। রাতে আর ঘুমাতে পারি নি। চোখ বুঝলেই ঐ কবির গাজীর কথা মনে হয়েছে। ঐ নৃশংসতার কথা মনে হয়েছে। ঘুম না আসায় আবোল-তাবোল লিখে গিয়েছি। অবশেষে ৭ টার দিকে আমি ঘুমাতে গিয়েছি।

আমার আবোল-তাবোল কথাগুলো তুলে ধরলাম -

আমার ঘুম চলে যায়
চোখ বুজলে পরে।
চোখের কোণে ভাসে -
'কবির গাজী মরে'
শয়তানেরা ধরলো তারে
বাঁধলো শক্ত করে,
অত্যাচারে রইলো ঝুলে
ঐ বট গাছের 'পরে।
দমখানি তার বেড় হয়ে গেল
জোটেনি ফোঁটা পানি,
লুটিয়ে পরে নীথর দেহ
সাথে নিয়ে মিছে গ্লানি।
এভাবেই মরে কবির গাজীরা
রুলুলদের হাতে পরে,
দোষ না করেও দোষী হতে হয়
নানান অত্যাচারে।
আর কতশত কবির গাজীরা
মরবে বিনা দোষে??
ঘুম ভেঙে ফিরবো মোরা
নতুন করে হুঁশে??
সব শোষিত দাঁড়িয়ে ওঠো
নিজের পায়ের 'পরে,
অস্ত্র তোল, যুদ্ধ হবে
সাম্যবাদের তরে।
শুধু স্বাধীনতা না, মুক্তিও চাই
সারাটা বাংলা জুড়ে,
রক্তচোষা বাদুরগুলোকে
ছোড় আস্তাকুড়ে।

সবাই আসুন। দেশটাকে নতুন করে গড়ে তোলার কাজে হাত বাড়াই। অসহায় কবির গাজী-সীমা চৌধুরী-ইয়াসমীন-পূর্ণিমা-রুমানা-লিমনদেরকে বাঁচাই। ঐসব রক্তচোষা বাদুড়দের সমাজ থেকে বিদেয় দেই।

**কারো কাছে যদি সবটাই ঝাপসা মনে তবে দেখে নিনঃ
শতাধিক লোকের সামনে গাছে ঝুলিয়ে পিটিয়ে হত্যা

বুধবার, ২৯ জুন, ২০১১

বীর বাঙালি… জেগে ওঠো …


লাখো মায়ের সম্মান
আর বুকের রক্ত দিয়ে
শহীদ-গাজী-বীর সেনানী
এসেছে পতাকা নিয়ে,
লাল-সবুজ তুলেছে গগণে
জয় বাংলা বলে।
আজো শুধু বলি সেই গল্প
কত যুগ গেছে চলে।
ধূলো পড়েছে সেই স্মৃতিতে,
বাঙালি ঝিমায় ঘুমে।
বাঙালি নামের রক্ত চোষারা
সুযোগে উঠেছে ধুমে।
পথে পথে আজ সন্ত্রাস
রক্তের হানাহানি।
নেত্রীরা আছে গদি বাঁচাতে
ঐ নিয়ে টানাটানি।
কেউ চেয়ে দেখে নাতো
কোথা গেছে দেশ,
ছাড়ে শুধু ফাঁকা বুলি -
'সোনার বাংলাদেশ'
শয়তানের হাতে বাউল মরে
গলাচিপা, পটুয়াখালী,
দেশ বাঁচাতে র‍্যাব নেমেছে
আর লিমন খেয়েছে গুলি!!
ঘরে-বাইরে মা-বোনেরা মরে
পুরুষের মার খেয়ে
আমরা শুধু 'উহু-আহা' করি
ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে।
ব্যাস্ত সবাই সুশীল-মুখোশে
গুছাই নিজের আখের,
মুখ খুলতে ভয়েই মরি
যেন এ করাত শাঁখের।
বীর বাঙালি হয়েছে সময়
জেগে ওঠো আজ তবে,
নতুন করে দেশটা গড়ি
হাত হাত রাখো সবে...

শনিবার, ২৫ জুন, ২০১১

দেশকে বাঁচাও... মাকে বাঁচাও...


যশোর রোড - মৌসুমী ভৌমিক




এটা কি শুধুই গান??
এটা কি শুধুই কান্নার গান??
এটা কি শুধুই মন খারাপ করার গান??
ঐ ফেলে আসা দিনগুলো কি শুধুই ছুড়ে ফেলার??
এখান থেকে কি নতুন করে জেগে উঠতে ইচ্ছে করে না??
ইচ্ছে কি করে না নিজে দেশের নাম বিশ্বের বুকে উঁচু করে ধরতে??
ইচ্ছে কি করে না পাক-ভারত-মার্কিনীদের থাবা থেকে নিজেদের বাঁচাতে??
ইচ্ছে কি করে না নিজের দেশকে বিক্রি করে দেওয়াটাকে ঠেকাতে??
ইচ্ছে কি করে না দেশের একটু জন্য কাজ করতে??
ইচ্ছে কি করে না দুর্নীতিটা ছেড়ে দিতে??
ভুলে কি গেছি দেশটাও মা??
সব দেখেও চুপ কেন??

যদি দেশ মায়ের জন্য কিছু একটা করতে ইচ্ছে করে, তবে জেগে ওঠো।
মাথা অনেক নুয়েছি, এবার নোয়ানোর জালটাকে ছিড়ে ফেলো।
দেশের সম্পদ অন্যের হাতে তুলে দেবার জন্য না।
কাজ করে দেশ মায়ের মুখ উজ্জ্বল করো।
প্রিয় এই দেশটাকে রক্ষা করো।
প্রিয় মাকে রক্ষা করো।

রবিবার, ১৯ জুন, ২০১১

আজকে নাকি বাবা দিবস??


সারা বছর বাপের খবর রাখে না... শুধু টাকা দরকার হলেই বাপের কাছে গিয়ে হাত পাতে... আর 'বাবা দিবস' নামক দিবস আসলেই ফেইসবুকে বাপের সাথে নিজের ছবি দিবে আর স্ট্যাটাসে বাবাকে নিয়ে উহু আহা করবে... এই হল বাপের প্রতি ভালবাসা - সবাই না, তবে অনেকেরই দেখি এরকম দশা!!

বাবা দিবস টা অনেকটাই এরকম। লোক দেখানো ভালোবাসায় ভরপুর!!

পশ্চিমা দেশগুলোতে আবগের দাম কম। তারা একটা বয়সের সাথে সাথে ছেলে মেয়েদের ছেড়ে দেন, নিজের রাস্তা নিজেকেই দেখে নিতে বলেন। তারা আমাদের দেশের বাবা-মায়ের মতন সন্তানদের আঁকড়ে ধরে রাখেন না। ছেলেরা-মেয়েরা নিজেদের রাস্তা দেখে নেন। কাজ খোঁজেন, সঙ্গী খোঁজেন, জীবনের সফলতা খোঁজেন। বৃদ্ধ বাবা-মায়ের জায়গা হয় বৃদ্ধাশ্রমে, তাদের দেখার ফুরসাৎ মেলে না। তাই এই সুযোগ করে দেবার জন্য বছরে একটা দিন ঠিক করা হয়েছে, যেদিন সন্তানেরা কার্ড, ফুল, কেক নিয়ে বাবার সাথে দেখা করবেন।

এই দিবসের প্রচারণা চালায় পশ্চিমা ব্যবসায়-প্রতিষ্ঠান গুলো। কেন করে?? কারণ এই দিন উপলক্ষে কার্ড বিক্রি হবে, ফুল বিক্রি হবে, কেক বিক্রি হবে, বাবাদের দিতে নানা রকম উপহার সামগ্রী কেনা-বেচা হবে।

কিন্তু আমাদের দেশে এই প্রচারণা কেন?? আমরা তো এত ব্যস্ত না যে বাবা-মায়েদের বৃদ্ধাশ্রমে রেখে জীবনের সফলতা খুঁজবো! ছোট বেলায় বাবার হাতে যত মারই খাই না কেন বাব্র আদরই সব ভুলিয়ে দিয়েছে। মার খাবার সময় ভুল করেও বাবার খারাপ চাইলেও একবারের জন্য হলেও পারতপক্ষে বাবাকে ছেড়ে থাকার কথা ভাবি না। বাবার সময়ে বাবা আমাদের দেখেছেন, আমাদের সময়ে আমরা বাবাকে দেখবো। আমাদের ৩৬৫-৩৬৬ দিনই আমাদের বাবার জন্য, মায়ের জন্য। প্রতিটা দিনই তাই বাবা দিবস, মা-দিবস। সব দিনই ভালোবাসবো। এক দিনের জন্য কার্ড দিয়ে, কেক কেটে দেখানো ভালোবাসার কি কোন প্রয়োজন আছে??

প্রতিদিনই দেশকে ভালোবাসবো, দেশের জন্য শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করবো, তাদের স্যালুট জানাবো, এর সাথে সাথে স্বাধীনতা দিবস, ভাষা দিবসটাও উদযাপন করবো। সবদিনই করবো তবে একটা বিশেষ দিন থাকতে পারে। বাবা বেঁচে থাকতে পরিবারের সবাই মিলে তা উদযাপন আর উনি পরলোকগত হয়ে থাকলে তো মৃত্যু দিবসে ধর্মীয় আচারের ব্যাপার আছেই।

কিছু মানুষ কার্ড ব্যবসায়ীদের ব্যবসা টিকানোর স্রোতে ভেসে ব্যপারটাকে লোক-দেখানো পর্যায়ে নিয়ে গেছে, মূলত তাদের জন্যই এই পোস্ট।

বুধবার, ১৫ জুন, ২০১১

নারী নির্যাতন আর কিছু কথা - যা না বললেই নয়...



সারা বিশ্বের কথা বাদ দেই, শুধু এই বাংলার কথাই বলি। এই বাংলার অন্তত অর্ধেক ঘরে নারী নির্যাতন হয়। আমরা দেখতে চেষ্টা করি না। কারণ ওরা সখিনা, মর্জিনা, কিংবা সালেহা, রাহেলা। ওদের নিয়ে ভাববার সময় কোথায়?? কিন্তু আমাদের ঢাবির শিক্ষিকা রুমানা মঞ্জুরের উপর অত্যাচারের কথা শুনে আমরা ঠিকই আঁতকে উঠি। আঁতকে ওঠার মতনই। কিন্তু আমাদের বিবেক রাহেলা-সালেহাদের জন্য না কেঁদে শুধু রুমানা মঞ্জুরদের জন্যই কাঁদে। কারণ উনি ঢাবির শিক্ষিকা। এই একচোখামি সারা দেশ জুড়েই চলছে।

কোন কোন নারী মানবাধিকারের কর্মী সেমিনারে বসে বড় বড় বুলি আওড়ায়, নারী মুক্তির আন্দোলন করে। আবার বাসায় গিয়ে ছেলের বউকে নির্যাতন করে, ছেলেকে বউ পেটাতে উসকে দেয়। কোন কোন পুরুষ পত্রিকা, টেলিভিশন কিংবা সেমিনারে নারীবাদী কথা বলে বাহবা পায়। অথচ ঘরে ফিরে বউ পেটা্য, হয়তোবা বউয়ের দোষঃ তরকারিতে নুন কম হওয়া। এইসব বর্ণচোরার কোন অভাব নেই। বরং এদের সংখ্যাই বেশি।

দেশে দুই নারী মিলে সাড়ে ১৭ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী। কই তারা তো একটা নারী-নীতিই চালু করতে পারলো না!! এক্ষেত্রে বাঁধা নাকি কোরান-হাদীস। কোরান-হাদীসে আরো কত কথাই লেখা আছে সেগুলা নিয়া তো তাদের মাথাব্যথা নাই। কোরান-হাদীসে নারীদের ভাগ কম দেওয়াকে অনেক শিক্ষিত পুরুষই কোরাণ না মানলেও এইবেলা মেনে নেন, কারণ এতে যে তারই স্বার্থ আছে। এদেরকে একবার বুকে হাত দিয়ে বলতে বলেন যে কোরানে যদি বলা হত পুরুষেরা নারীর অর্ধেক সম্পত্তি পাবে তবে মানতো কিনা। এইবেলা কবি অবশ্যই নীরব থাকবেন।

নারী নির্যাতনের যতগুলো কারণ আছে তার শুরুতেই থাকবে যৌতুক আর পরকীয়া। যারা কোরান-হাদীসের কথা বলে নারী-নীতির বিরোধীতা করেন তারা কি বলতে পারবেন যে কোরান-হাদীসের কোন আয়াতে যৌতুকের কথা বলা হয়েছে?? প্রয়োজনে একটু পড়াশোনা করেই নাহয় উত্তর দিন। এইবার আসি পরকীয়ার কথায়। অনেকেই (বিশেষ করে তথাকথিত নারীবাদিরা) বোঝাতে চান যে এই পরকীয়া শুধু পুরুষেরাই করে থাকেন। বড়ই হাস্যকর। নারীরাও যে এই ব্যাপারে খুব একটা পিছিয়ে নেই সেটা স্বীকার না করলেই বক্তাদের অন্ধ না বলে পারছি না।

শুধু একজন রুমানা না, সকল নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। তবে এখানে পুরুষদের করার মতন বিশেষ কিছু নেই। নারীদের এই লড়াইতে তাদের নিজেদেরকেই লড়তে হবে। নিজেদের লড়াই নিজেরা করলেই তাতে প্রাণ থাকে, অন্য করলে তার আর দাম থাকে না।

পোস্টটা এখানেই শেষ করলে হয়তো ভালো হত, কিন্তু তাতে যে লেখাটা অসম্পূর্ণ থেকে যায়।

পুরুষেরা গায়ে হাত তোলেন। আর নারীরা কী করেন?? ঘরে ঘরে যে নারীরা পুরুষদের উপর মানসিক অত্যাচার করেন তার কোন হিসেব নেই। হিসেব করলে একটা ভয়ংকর তথ্যই পাওয়া যাবে।

এই ব্লগে অনেক বিবাহিত পুরুষ ব্লগার আছেন। তারা একবার চিন্তা করে দেখেন তো আপনি আপনার স্ত্রীর কাছে মানসিক অত্যাচারের স্বীকার কিনা!! হয়তো লজ্জাই অনেকেই স্বীকার করবেন না। তবে লজ্জা ভাঙ্গার সময় চলে এসেছে। আর বিবাহিত নারী ব্লগাররা একটু ভেবে দেখেন তো আপনার স্বামীর সাথে যা যা করেন তা ঠিক করেন কিনা আর তাকে মানসিকভাবে কতটা ভালো থাকতে দিচ্ছেন।

ঘরে ঘরে নারী নির্যাতনটা বন্ধ হওয়া খুব জরুরী। এর সাথে নারীদের পুরুষদের উপর মানসিক অত্যচারটাও বন্ধ হওয়া দরকার।

মঙ্গলবার, ১৪ জুন, ২০১১

এর্নেস্তো গেভারা দে লা সের্না - তোমার জন্ম অমর হোক


এর্নেস্তো গেভারা দে লা সের্না - বিশ্বজগতে আধুনিক বিপ্লবের ঝাণ্ডা বাহক। মানুষ তাকে ভালোবেসে ডাকতো 'চে', এর্নেস্তো চে গেভারা নামে। আর্জেন্টিনায় 'চে' নামটির মানে অত্যন্ত প্রিয় মানুষ। মার্কিনীরা তাঁর দেহখানি নিথর করে দিয়েছে ৪২ বছর আগেই। কিন্তু তাঁর আত্মা আজও রয়ে গেছে কোটি মানুষের হৃদয়ে।

আজ থেকে ৮৩ বছর আগে এইদিনে এক শুভক্ষণে জন্মেছিলেন এর্নেস্তো। এই এর্নেস্তোই ভবিষ্যতে বিপ্লবের প্রবাদ পুরুষে পরিণত হত। সারাবিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে যাওয়া পুঁজিবাদের বিষবাষ্পে সাধারণ মানুষ যখন চরমভাবে দারিদ্যে আক্রান্ত, তখন কিছু মানুষ এর প্রতিবাদে মাঠে নামেন। একসময় সেই বিপ্লবীদের পাশে এসে দাঁড়ান এর্নেস্তো। তিনি কখনো বিপ্লবীদের করেছেন উদ্বুদ্ধ, কখনো বা নিজেই অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পরেছেন অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে। তার কারণে মার্কিনীদের ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছিল। তাই এর্নেস্তোকে মেরে ফেলার জন্য হিংস্র জাল ফেলতে থাকেন। ১৯৬৭ সালে এর্নেস্তো যখন বলিভিয়ার বিপ্লবে যোগ দিতে ছদ্মবেশে দেশটিতে যান, তখন ৭ অক্টোবর সিআই এর লোকেরা তাকে আটক করে আর ৯ অক্টোবর ১৯৬৭ সাল বেলা ১.১০ টায় অমানবিকভাবে হত্যা করে। হত্যা করবার পর তার লাশটাও গুম করে ফেলা হয়। পরে ১৯৯৭ সালে ভ্যালেগ্রান্দের একটি গণ-কবরে চে ও তাঁর সহযোদ্ধাদের দেহাবশেষ আবিষ্কৃত হয়।

যারা মানবতার বুলি আওড়ায়, সেই মার্কিনীরাই যখন বিনা বিচারে কাউকে হত্যা করে তখন কোন মানবাধিকার কমিশন আওয়াজ তোলার সাহস পান না। 'চে' এর ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছিল।

'চে' ছিল, আছে থাকবে। 'চে' থাকবে সবার অন্তরে, বিপ্লবী চেতনায়। যতদিন না মানুষের গরিবী না ঘুঁচবে, না ঘুঁচবে পুঁজিবাদ আর সাম্রাজ্যবাদের নামে দরিদ্র্য নিপীড়ন, ততদিন মানুষ এই জাল থেকে বেড়িয়ে আসতে বিপ্লবের পথে পা দিবেই। সেই ১৯৬৭ থেকে আজ অনেক বছর চলে গেছে, বিশ্বও অনেক বদলে গেছে। কিন্তু সেই সাধারণেরা আজও নিপীড়িত। তাই সেই বিপ্লব আজও চলবে তবে নতুন আদলে। সময়ের সাথে সাথে কৌশল বদলাবে কিন্তু সাধারণ মানুষের বিপ্লব টিকে থাকবে। জয় বিপ্লবের জয়।












মঙ্গলবার, ১৭ মে, ২০১১

হুমায়ুন আহমেদ ও তার নামাজ সম্পর্কে ধারণা আর কিছু কথা…

হুমায়ুন আহমেদ

আমারব্লগের ব্লগার ধ্রুব তারার লেখা মাসিকাব্য বিতর্কের অবসানের পর খুব বেশি দিন পার হয় নি। ঐ পোস্টে আমি ধ্রুব তারার পক্ষেই ছিলাম। ব্যক্তি হুমায়ুন আহমেদ নিয়ে আমার খুব একটা মাথা ব্যাথা নেই। ব্যক্তি জীবনে উনি যাই করুক না কেন একজন পাঠক হিসেবে উনার লেখা উপন্যাসগুলোর সাহিত্যমান নিয়ে প্রশ্ন আছে। একসময়ের তারকা লেখক আজ শুধুই খোলস মাত্র। আমরা বাংলাদেশি বাঙালিরা তাই নিয়েই নাচানাচি করি। নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে দেখলে হুমায়ুন আহমেদের 'জোছনা ও জননীর গল্প', 'মধ্যাহ্ন' কিংবা 'শঙ্খনীল কারাগার' সাফল্যের দাবিদার হলেও উনার অধিকাংশ উপন্যাসেই সাহিত্য বলে কিছু নেই। প্রশ্ন চলে আসে তো উনি কেন এত জনপ্রিয়?? এর উত্তরটা এক নির্মম সত্য। আমাদের বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষজনই সাহিত্য বোঝে না, তারা যা সহজে পড়তে পারে তাই গোগ্রাসে গিলে খায়। আর একজন মানুষ যখন বাজার কাটতির জন্য বছরে গোটা দশেক উপন্যাস লিখে তবে সেই লেখাগুলো স্বভাবতই মানহীন হয়ে পড়ে। এ নিয়ে আমার ধারণা উনি আর বই লেখেন না। উনি বেশ কয়েকজন এসিস্ট্যান্ট রেখে দিয়েছেন। উনার এসিস্ট্যান্টরা উনার দেওয়া ধারণা অনুযায়ী গৎবাধা উপন্যাস লিখে যান আর সেগুলোই বাজারে হুমায়ুন আহমেদের নামে কেটে চলে।

কী নিয়ে লিখতে আসলাম আর কী লিখে চলছি! মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসি। আজ ব্যক্তি হুমায়ুন আহমেদের অজানা সত্যি কিছু গল্প নিয়ে এই পোস্ট সাজালাম।

নামাজঃ
সকলেই জানেন যে হুমায়ুন আহমেদ খুব একটা ধার্মিক না। এমন কী উনাকে মৌলবাদীরা মুরতাদও ঘোষণা করেছে। এই হুমায়ুন আহমেদ আমার এক শিক্ষকের বাল্যকালের বন্ধু। হুমায়ুন আহমেদ আর আমার শিক্ষক মোহাম্মদ আলী বগুড়ার এক স্কুলে পড়তেন। স্যারের কথা অনুযায়ী এই হুমায়ুন আহমেদ স্কুলের নিচের ক্লাশে খুব একটা ভালো ফলাফল করতো না। এমন কী ক্লাশ সিক্স-সেভেন এ পরীক্ষার হলে স্যারের খাতা দেখেই অঙ্ক করতেন। পরে অবশ্য দেখা গেছে হুমায়ুন আহমেদ অনেক বেশি মেধাবী।

মোহাম্মদ আলী হজ্ব সেরে দেশে ফিরেছেন। গাল ভর্তি দাড়ি রেখেছেন। এই বেশে গেলেন বন্ধু হুমায়ুনের বাসায়। সেখানে কথায় কথায় হুমায়ুন আহমেদ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজী মোহাম্মদ আলীর সাথে নামাজ নিয়েই আলোচনা করতে লাগলেন।

- মোহাম্মদ আলী, তুমি তো জানই যে আমি এইসব নামাজ-রোজার মধ্যে নাই। তুমি তো দেখি হজ্ব করে আসলা। তা তুমি কি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজই পড়??
- হুম তাই পড়ি। পারত পক্ষে মিস দেই না। আর নামাজ না পরলে পরকালে কী হবে??
- ভালো। তা তুমি কি এইসব বিশ্বাস করো??
- হুম করি এবং মানিও।
- আচ্ছা নামাজে তুমি কী বলো এত??
- নামাজে যা বলতে হয় তাইই বলি। এখন তুমি বোলো না যে তুমি জানো না যে কী বলতে হয়।
- না তা জানি। আর জানি বলেই এই প্রশ্ন করলাম। তা প্রতিবার নামাজে একই কথা বল??
- হুম, তাইই তো বলতে হয়।
- তা আল্লাহ তোমার উপর বিরক্ত হন না??
- হুমায়ুন, এইটা আবার কেমন প্রশ্ন করলা??
- তোমারে বুঝায় বলি। ধর, তোমার এক ছাত্র তোমার প্রশংসা করে একটা কবিতা লেখলো। তুমি তো ঐ কবিতা শুনে অনেক খুশি হবা, তাই না??
- তাইই তো হবার কথা।
- পরদিন সকালে যদি আবারো একই কবিতা শোনায় কেমন লাগবে?? আগের চাইতে কম ভালো লাগবে কি??
- হুম, তাই।
- এখন ঐ ছাত্র যদি সকাল-বিকাল একই কবিতা পড়ে শোনায় তবে তুমি কি ধৈর্য ধরে তাই শুনবা??
- না মেজাজ খারাপ হবে।
- তোমার এত অল্পতেই মেজাজ খারাপ হয়। আর কোটি কোটি মানুষ হাজার হাজার বার একই কথা বলতেছে। আল্লাহ বিরক্ত হন না??
- হুম, হবার কথা।
- তো তুমি নামাজ পড় কেন??
- হুমায়ূন, তোমার কথায় যুক্তি আছে। তবে তুমি যাইই বলো না কেন আমি নামাজ পড়া ছাড়বো না। আল্লাহ বিরক্ত হলে হোক। উনিই যেহেতু পড়তে বলেছেন আমি পড়ে যাবো।
- ঠিক আছে পড়তে থাকো। দেখো মরার পর কী হয়!

কিডনিঃ
হুমায়ুন আহমেদের ৫২তম জন্মদিনের কথা। মোহাম্মদ আলী শাহবাগ থেকে তাজা দেখে ৫২ টা গোলাপ নিয়ে হুমায়ুন আহমেদের বাড়ি গেলেন। গিয়ে দেখলেন বগুড়া থেকে এক লোক এসেছেন। উনি হুমায়ুন আহমেদকে বলছেন, 'স্যার, আপনি চাইলে আমি আমার জান দিয়ে দিবো! আপনি আপনার নাটকে আমাকে একটা চান্স দেন।' হুমায়ুন আহমেদ তার এসিট্যান্টকে ডেকে বললেন, 'তুমি এর নাম, ঠিকানা, ফোন নাম্বার লিখে রাখো তো। এ আমার জন্য জীবন দিতেও রাজি।' এসিস্ট্যান্ট সব টুকে নিলে চলে গেল। এরপর হুমায়ুন আহমেদ ঐ লোককে বললেন, 'তুমি বাড়ি ফিরে যাও। আমার জন্য তোমাকে জীবন দিতে হবে না। যদি কখনো কিডনি লাগে তো তোমাকে ফোন দিবো। চলে এসো।'

শুক্রবার, ৬ মে, ২০১১

দশ মাস দশ দিন ধরে গর্ভে ধারণ... কিন্তু কীভাবে সম্ভব??

কিছু সাধারণ বাংলা চলচ্চিত্র দেখলে নায়ক/নায়িকার মায়ের মুখ থেকে তাদের উদ্দেশ্যে করা এই কথা অবশ্যই শুনে থাকবেনঃ

দশ মাস দশ দিন তোকে পেটে ধরেছি......

অথবা নিশ্চই শুনেছেন জেমসের গাওয়াঃ

দশ মাস দশ দিন ধরে গর্ভে ধারণ
কষ্টের তীব্রতায় করেছো আমায় লালন...


কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞান কিন্তু তা বলে না। চিকিৎসা বিজ্ঞান বলে মানুষের ক্ষেত্রে গর্ভ-ধারণ কাল গড়ে ৪০ সপ্তাহ। তবে এটা ৩৭-৪২ সপ্তাহের মধ্যেই থাকে। গড় হিসেবে ৪০ সপ্তাহের মানে ২৮০ দিন বা ৯ মাস ১০ দিন [গড়ে ৩০ দিনে মাস ধরে]... বরং ১০ মাস দশ দিন গর্ভে থাকলে সন্তানের মৃত্যুর সম্ভাবনাই অনেক বেশি। সাথে মায়ের মৃত্যু ঝুঁকি তো আছেই।

তাহলে কেন ১০ মাস ১০ দিন বলা হয়??

একটু ভাবুন। ভেবে আপনার যুক্তি বলুন। আর আমি আমার পোস্ট এগিয়েছি এই যুক্তি নিয়ে ভাবনা থেকেই।

অন্যান্য প্রাণীর মতন মানুষের জীবনেরও অন্যতম লক্ষ্য তার ভবিষ্যত প্রজন্মকে এই দুনিয়ায় নিয়ে আসা। আর এর জন্যই দরকার নারী পুরুষের শারীরিক সম্পর্ক। সকল প্রাপ্ত বয়স্কেরই একথা জানার কথা তাই আর এই নিয়ে কথা বাড়াচ্ছি না।

আরেকটা জানা ব্যাপারে কথা না বললেই নয়। এটা হল মিন্সট্রুয়াল কিংবা রজঃচক্র কিংবা মাসিকীর ব্যাপারে কিছু কথা বলবো। এটা একটা মেয়েকে শারীরিক ভাবে নারী হয়ে ওঠার আগমনী বার্তা বহন করে। মেয়েদের এই রজঃচক্র সাধারণত প্রায় ১ মাস (আসলে ২৮ দিন) পর পর হয় বলেই একে বাংলাতে অনেকেই মাসিক বলে থাকেন। এই মিন্সট্রুয়াল কী জিনিস তার বিশদ ব্যাখ্যাতেও যাচ্ছি না। আমার কার্যকরণে যতটুকু দরকার শুধু ততটুকুই টানবো।

সন্তান গর্ভে থাকাকালীন সময়ে মায়েদের এই চক্র বন্ধ থাকে। তাই সর্বশেষ মিন্সট্রুয়ালের দিন থেকেই হিসেব করে বেড় করা হয়ে থাকে গর্ভ-ধারণকালের হিসেব। যদিও সাধারণত নারীর ডিম্বাণু তার সঙ্গী পুরুষের শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হবার সময়কাল এই দিনটির পরে হবার সম্ভাবনাই অনেক বেশি। কারণ এই চক্র চলাকালীন সময়ে নারী-পুরুষের মিলন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যদিও বিজ্ঞান বলে এই সময়েই নারীর দেহ তার সঙ্গীকে বেশি চাইবে। আর মন তো শরীরেরই অংশ। তাই ১০ মাস ১০ দিন হবার কোন সম্ভাবনাই নাই। বরং প্রকৃত হিসেবে এই দিনের পরিমাণ ৯ মাস ১০ দিনেরও কম হবে

এরপরও পরিস্কার হল না এই ১০ মাস ১০ দিনের হিসেবটা। আমার ধারণা বাংলাদেশে এই কথার প্রচলন যখন হয় তখন গর্ভধারণ কাল নারী-পুরুষের সফল মিলনের পূর্বের মিন্সট্রুয়ালের আগের মিন্সট্রুয়ালের প্রথম দিন থেকে হিসেব করতো। তাই স্বভাবতই সময়কাল ১ মাস বেড়ে যাবে।

আলোচনা করে মনে হল আরো কিছু কথা না বললেই নয়। এই মিন্সট্রুয়ালের হিসেব থেকেই কোন প্রকার নীরোধ ছাড়াই জন্ম-নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। কারণ এই মিন্সট্রুয়ালের হিসেব থেকে সহজেই বোঝা সম্ভব নারী এর কোন সময়কালে মিলিত হলেও গর্ভবতী হবেন না। অনেক শিক্ষিত ব্যক্তিকেই দেখেছি যে এই হিসেবে গন্ডগোল করায় নারী অকালে গর্ভধারণ করে বসে এবং কোন কোন সময়ে এর করুণ পরিণতি ঘটে ভ্রূণ অপসারণের মতন অমানবিক কাজের মধ্য দিয়ে। উল্লেখ্য এই গননা অনুযায়ী রজচক্রের ৩-৪ দিন সবচেয়ে নিরাপদ। এরপর নিরাপদ হল রজচক্র শুরুর দিনকে প্রথম দিন গুণে ৮ম-২১তম দিন সময় কালে কোন প্রকার নীরোধ ছাড়া শারীরিক সম্পর্কে না যাওয়া। তবে অসময়ে সন্তান না চাইলে নীরোধের ব্যবহারই সর্বোচ্চ সতর্ক ব্যবস্থা। কারণ শুক্রাণু নারীদেহের ডিম্বাশয়ে ৫ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে!!!

এত কথা বললাম কিন্তু এই ব্যাপারে ধর্মীয় কথাগুলো এড়িয়ে গেলাম - ব্যাপারটা ঠিক হচ্ছে না। তাই ঐ কথা দিয়েই শেষ করছি।

হিন্দু ধর্ম অনুযায়ীঃ
রজচক্রের ৪-৫ দিন মহিলারা কোন প্রকার পূজার্চণা করতে পারেন না।

ইসলাম ধর্ম অনুযায়ীঃ
রজচক্রের ৪-৫ দিন মহিলারা নামাজ পড়তে পারবেন না, রোযা রাখতে পারবেন না, এমন কি কোরানও ধরতে পারবেন না। এবং এই সময়কালে শারীরিক সম্পর্কে যাওয়া নিষেধ।

কেন ধর্মগুলো নারীদের শারীরবৃত্তীয় স্বাভাবিক এক প্রক্রিয়াকালে নারীদের ছোট করে দেখার চেষ্টা করেছে তার উত্তর আমার জানা নেই। আশা করি অন্য কেউ এই ব্যাপারে পোস্ট দিবেন।

আর সবশেষে আমিপ্রিয় মানুষ নিজের একটা কথা দিয়েই শেষ করছি। আমার খুবই হাসি পায় যখন কোন ২৩-২৪ বছরের মেয়ে দাবি করে যে সে সবগুলো রোযাই রেখেছে। কিন্তু অনেক কষ্টে সে হাসি চাপতে হয়। এটা মিথ্যা দাবি শুনে মেজাজ খারাপ অথচ কিছু বলা যাবে না এই কষ্টের হাসি।

রবিবার, ৩ এপ্রিল, ২০১১

কুমড়ো পটাশ ও এর জনক...

ও ভাই 'কুমড়ো পটাশ' টা কী জিনিস?? ছবি দেখে বলুন তো চিনেন কিনা??



আমার ছোট বেলার সবচেয়ে কাছে যা ছিলো তার একটা হল গল্প-কবিতা-ছড়ার বই, এর মাঝে হ-য-ব-র-ল'ই বেশি থাকতো। মজার মজার গল্প-ছড়ার ভেতর দিয়ে অনেক বেশি অদ্ভুতুড়ে জিনিসের জন্ম দেওয়া মানুষই জিন্ম দিয়েছেন এই 'কুমড়ো পটাশ' কে। এবার ছড়াটা একটু পড়ে নিঃ

(যদি) কুম্‌‌ড়োপটাশ নাচে-
খবরদার এসো না কেউ আস্তাবলের কাছে ;
চাইবে নাকো ডাইনে বাঁয়ে চাইবে নাকো পাছে ;
চার পা তুলে থাকবে ঝুলে হট্টমুলার গাছে !

(যদি) কুম্‌‌ড়োপটাশ কাঁদে-
খবরদার! খবরদার! বসবে না কেউ ছাদে ;
উপুড় হয়ে মাচায় শুয়ে লেপ কম্বল কাঁধে ;
বেহাগ সুরে গাইবে খালি 'রাধে কৃষ্ণ রাধে' !

(যদি) কুম্‌‌ড়োপটাশ হাসে-
থাকবে খাড়া একটি ঠ্যাঙে রান্নাঘরের পাশে ;
ঝাপ্‌সা গলায় ফার্সি কবে নিশ্বাসে ফিস্‌ফাসে ;
তিনটি বেলা উপোস করে থাকবে শুয়ে ঘাসে !

(যদি) কুম্‌‌ড়োপটাশ ছোটে-
সবাই যেন তড়বড়িয়ে জানলা বেয়ে ওঠে ;
হুঁকোর জলে আলতা গুলে লাগায় গালে ঠোঁটে ;
ভুলেও যেন আকাশ পানে তাকায় নাকো মোটে !

(যদি) কুম্‌‌ড়োপটাশ ডাকে-
সবাই যেন শাম্‌লা এঁটে গামলা চড়ে থাকে ;
ছেঁচকি শাকের ঘণ্ট বেটে মাথায় মলম মাখে ;
শক্ত ইঁটের তপ্ত ঝামা ঘষতে থাকে নাকে !

তুচ্ছ ভেবে এ-সব কথা করছে যারা হেলা,
কুম্‌‌ড়োপটাশ জানতে পেলে বুঝবে তখন ঠেলা ।
দেখবে তখন কোন্‌ কথাটি কেমন করে ফলে,
আমায় তখন দোষ দিওনা, আগেই রাখি বলে ।

এবার আসি এর জনকের কথায়। এর জনক হলেন আমার সবচেয়ে প্রিয় ছড়াকার সুকুমার রায়। সুকুমার রায়ের জন্ম ১৮৮৭ সালের ৩০শে অক্টোবর, কলকাতার এক ব্রাহ্ম পরিবারে। তিনি ছিলেন বাংলা শিশুসাহিত্যের উজ্জ্বল রত্ন উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর ছেলে। সুকুমারের মা বিধুমুখী দেবী ছিলেন ব্রাহ্মসমাজের দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের মেয়ে।সুবিনয় রায় ও সুবিমল রায় তাঁর দুই ভাই। এ ছাড়াও তাঁর ছিল তিন বোন।

সুকুমার রায় জন্মেছিলেন বাঙালি নবজাগরণের স্বর্ণযুগে। তাঁর পারিবারিক পরিবেশ ছিল সাহিত্যানুরাগী, যা তাঁর মধ্যকার সাহিত্যিক প্রতিভা বিকাশে সহায়ক হয়। পিতা উপেন্দ্রকিশোর ছিলেন শিশুতোষ গল্প ও জনপ্রিয়-বিজ্ঞান লেখক, চিত্রশিল্পী, সুরকার ও শৌখিন জ্যোতির্বিদ। উপেন্দ্রকিশোরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, যিনি সুকুমারকে সরাসরি প্রভাবিত করেছিলেন। এছাড়াও রায় পরিবারের সাথে জগদীশ চন্দ্র বসু, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় প্রমুখের সম্পর্ক ছিল। উপেন্দ্রকিশোর ছাপার ব্লক তৈরির কৌশল নিয়ে গবেষণা করেন, এ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান এবং মানসম্পন্ন ব্লক তৈরির একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। মেসার্স ইউ. রয় এন্ড সন্স নামে ঐ প্রতিষ্ঠানের সাথে সুকুমার যুক্ত ছিলেন।

কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৯০৬ সালে রসায়ন ও/অথবা পদার্থবিদ্যায় বি.এসসি.(অনার্স) করার পর সুকুমার মুদ্রণবিদ্যায় উচ্চতর শিক্ষার জন্য ১৯১১ সালে বিলেতে যান। সেখানে তিনি আলোকচিত্র ও মুদ্রণ প্রযুক্তির ওপর পড়াশোনা করেন এবং কালক্রমে তিনি ভারতের অগ্রগামী আলোকচিত্রী ও লিথোগ্রাফার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ১৯১৩ সালে সুকুমার কোলকাতাতে ফিরে আসেন। সুকুমার ইংলান্ডে পড়াকালীন, উপেন্দ্রকিশোর জমি ক্রয় করে, উন্নত-মানের রঙিন হাফটোন ব্লক তৈরি ও মুদ্রণক্ষম একটি ছাপাখানা স্থাপন করেছিলেন। তিনি একটি ছোটদের মাসিক পত্রিকা, 'সন্দেশ', এই সময় প্রকাশনা শুরু করেন। সুকুমারের বিলেত থেকে ফেরার অল্প কিছু দিনের মধ্যেই উপেন্দ্রকিশোরের মৃত্যু হয়। উপেন্দ্রকিশোর জীবিত থাকতে সুকুমার লেখার সংখ্যা কম থাকলেও উপেন্দ্রকিশোরের মৃত্যুর পর সন্দেশ পত্রিকা সম্পাদনার দায়িত্ব সুকুমার নিজের কাঁধে তুলে নেন। শুরু হয় বাংলা শিশুসাহিত্যের এক নতুন অধ্যায়। পিতার মৃত্যুর পর আট বছর ধরে তিনি সন্দেশ ও পারিবারিক ছাপাখানা পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর ছোটভাই এই কাজে তাঁর সহায়ক ছিলেন এবং পরিবারের অনকে সদস্য 'সন্দেশ'-এর জন্য নানাবিধ রচনা করে তাঁদের পাশে দাঁড়ান।

১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়ে মাত্র সাঁইত্রিশ বছর বয়সে সুকুমার রায় মৃত্যুবরণ করেন, সেই সময় এই রোগের কোনো চিকিৎসা ছিলনা। তাঁর মৃত্যু হয় একমাত্র পুত্র সত্যজিৎ এবং স্ত্রীকে রেখে। সত্যজিৎ রায় ভবিষ্যতে একজন ভারতের অন্যতম চিত্রপরিচালক রূপে খ্যাতি অর্জন করেন, ও নিজের মৃত্যুর ৫ বছর আগে ১৯৮৭ সালে সুকুমার রায়ের উপরে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রযোজনা করেন।


তথ্যসূত্রঃ উইকিপেডিয়া

মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ, ২০১১

আজ রুমীর জন্মদিন...

আজ ২৯ মার্চ, রুমীর জন্মদিন। শফি ইমাম রুমী। নামটা কি চিনতে পারছেন?? আমরা আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের নানা কাজে কত কিছুই তো ভুলে যাই। এটা ভুলে গেলেই বা ক্ষতি কী! এই রুমীই শহীদ রুমী। গেরিলা যোদ্ধা রুমী।










শফি ইমাম রুমী (২৯ মার্চ, ১৯৫২ - নিখোঁজ ৩০ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন গেরিলা যোদ্ধা। তিনি ছিলেন শহীদ জননী খ্যাত জাহানারা ইমামের জেষ্ঠ্য পুত্র। জাহানারা ইমাম রচিত একাত্তরের দিনগুলি গ্রন্থে রুমীকে অন্যতম প্রধান চরিত্র হিসেবে দেখা যায় এবং তাঁর মৃত্যুর জন্য জাহানারা ইমাম শহীদ জননী উপাধি পান।

শফি ইমাম রুমী ১৯৫২ সালের ২৯ মার্চ ইঞ্জিনিয়ার শরীফ ইমাম ও জাহানারা ইমাম দম্পতির উচ্চ-মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। আই. এস. সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর ১৯৭১‌ সালের মার্চ মাসে রুমী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি হন। তিনি ইলিনয় ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে সুযোগ পেলেও যুদ্ধ শুরু হয়ে যাবার দরুন আর পড়া হয়ে ওঠেনি।

যুদ্ধের প্রাথমিক পর্যায়ে, রুমী ধারাবাহিকভাবে তাঁর মা ও বাবাকে নিজের যুদ্ধে যাবার ব্যাপারে রাজি করানোর চেষ্টা করেন। অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৯ এপ্রিল মাকে রাজি সক্ষম হন। তিনি ২ মে সীমান্ত অতিক্রমের প্রথম প্রয়াস চালান। কিন্তু প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে তাঁকে ফেরত আসতে হয় এবং দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় সফল হন। তিনি সেক্টর-২ এর অধীনে মেলাঘরে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এই সেক্টরটির পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন খালেদ মোশাররফ ও রশিদ হায়দার। প্রশিক্ষণ শেষ করে তিনি ঢাকায় ফেরত আসেন এবং ক্র্যাক প্লাটুনে যোগ দেন। ক্র্যাক প্লাটুন হল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা আক্রমণ পরিচালনাকারী একটি সংগঠন। রুমী ও তার দলের ঢাকায় আসার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন হামলা করা। এ সময় তাঁকে ঝুঁকিপূর্ণ আক্রমণ পরিচালনা করতে হয় যার মধ্যে ধানমণ্ডি রোডের একটি আক্রমণ ছিল উল্লেখযোগ্য।

ধানমণ্ডি রোডের অপারেশনের পর রুমী তার সহকর্মীদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। ১৯৭১ সালের ২৯ আগস্ট তিনি তাঁর নিজের বাড়িতে কাটান, এবং এই রাতেই বেশকিছু গেরিলা যোদ্ধার সাথে পাক বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। পাকিস্তান হানাদার বাহিনী তাদের টিকটিকিদের মাধ্যমে তথ্য পেয়ে বেশ কিছু সংখ্যক যোদ্ধাকে গ্রেফতার করে যার মধ্যে ছিলেন বদি, চুন্নু, আজাদ ও জুয়েল। রুমীর সাথে তাঁর বাবা শরীফ ও ভাই জামীকেও ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। সুরকার আলতাফ মাহমুদও গ্রেফতার হন। জিজ্ঞাসাবাদের স্থানে রুমীকে ভাই ও বাবাসহ একঘরে আনলে রুমী সবাইকে তাদেরকে তাঁর সাথে যুদ্ধে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করতে বলেন। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন যে, পাক বাহিনী তাঁর কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সচেতন এবং এর সব দায়দায়িত্ব তিনি নিজেই নিতে চান। ৩০ সেপ্টেম্বরের পর রুমী ও তার সহযোদ্ধা বদী ও চুন্নুকে আর দেখা যায়নি।

ইয়াহিয়া খান ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ সালে সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা দিলে অনেক আত্মীয় তাঁর জন্য আবেদন করতে বলেন। কিন্তু রুমী যে বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ধরা পড়েছে, তাঁদের কাছে ক্ষমা চাইতে রুমীর বাবা শরীফ রাজি ছিলেন না। ফলে রুমীর আর ঘরে ফেরা হয়নি।

তথ্যসূত্রঃ উইকিপেডিয়া
চিত্রউৎসঃ শাফি ইমাম রুমীর ফেইসবুক ফ্যান পেইজ

আরো জানতে চাইলে পড়ুনঃ
১। ৭১ এর দিনগুলি - শহীদ জননী জাহানারা ইমাম
২। মা - আনিসুল হক

সোমবার, ২৮ মার্চ, ২০১১

সবই মিথ্যা... বানোয়াট...









এই যে দেখছেন ছবিগুলো;এর সবই মিথ্যা,সবই বানোয়াট।
ঐ মানুষগুলো শুয়ে থেকে শুধু মৃতের অভিনয় করে যাচ্ছে;
আর তাদের দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন অঙ্গগুলোও করছে অভিনয়;
নয়তো কোন এক চিত্রকৌশলী কত শ্রম দিয়ে করেছে তৈরি।
৩০ লাখ সংখ্যাটাই বানোয়াট; কেউই তো মরেনি সেদিন।
লাখো মা-বোন স্বেচ্ছায় গিয়েছিল পাকসেনাদের ব্যারাকে;
কারণ তারা ব্যকুল হয়েছিল ঐ পাকসেনাদের আদর পেতে।
এত সুদর্শণ, এত শক্তিশালী পুরুষ কি তারা দেখেছে আগে?
আমাদের বাপ-ভাইয়েরা সে যন্ত্রণায় করেছিল আত্মহত্যা,
আর আমরা? আজ সে দোষ চাপাই নিষ্পাপ পাকিদের কাঁধে!
ইতিহাসের ঐ কথাগুলো বানানো,কাল্পনিক অথবা অতিরঞ্জন!
তাই আজ কত শত বাঙালিদের বুকে ওঠে বিচ্ছেদের হাহাকার,
আর কণ্ঠে জাগে ভালোবাসার চিৎকারঃ'পাকিস্তান জিন্দাবাদ'।
মুখে, পেটে, গায়ে পাকি পতাকা এঁকে ছুটে যায় ক্রিকেট মাঠে,
নেচে গেয়ে করে উৎসব আর বলে ওঠে, 'পাকিস্তান জিতেগা'।
কত মহান সে ভালোবাসা! আর কত অপরূপ তার বাহ্যরূপ!
আজ বড় মনে হয়ঃ কত ভুল করেছিল বোকা মুজিব হায়!
দিয়েছে তাদের স্বাধীনতা যারা সুখ খুঁজে ফেরে পরাধীনতায়!


জ্বলজ্বলে সত্য নিচের ছবিগুলোঃ










বুধবার, ২৩ মার্চ, ২০১১

চে বেঁচে আছে প্রতিটি বিপ্লবীর চেতনায়...বিপ্লব থেকে যাবে, শুধু বদলাবে তার কৌশল...


চে - শুধুমাত্র এক মহান বিপ্লবীর নাম না।এক বিপ্লবী আত্মা।দেহ মরে গেছে।কিন্তু আত্মা থেকে গেছে প্রতিটি বিপ্লবীর চেতনায়।

চে এর সেই মার্ক্সীয় সমাজতন্ত্র আজ হয়তো আর আমাদের দেশের জন্য প্রযোজ্য না।সময়ের সাথে সাথে দাবিও বদলে গেছে।

স্বাধীনতার প্রায় চল্লিশটা বছর চলে গেছে।কী পেয়েছি আমরা??যদি আমরা হতাশাবাদীদের দলে না ভিড়ে থাকি তো দেখতে থাকবোঃ সে মুজিব সরকার থেকে শুরু করে আজকের সরকার, সব সরকারই দেশের জন্য কিছু না কিছু ভালো কাজ করতে চেয়েছে এবং কিছু ভালো কাজ করেছেও।কিন্তু তার সাথে করা খারাপ কাজগুলো বরাবরই তাদের ভালো কাজকে ছাপিয়ে গেছে।তা তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ কিংবা দলীয় স্বার্থ কিংবা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বহির্শক্তির স্বার্থই রক্ষা বেশি করেছে অথবা করতে বাধ্য হয়েছে।

এই দেশের জন্মযাত্রা থেকেই নানা বিপ্লব-প্রতি বিপ্লব চলে আসছে।কিন্তু সেখানে সাধারণ মানুষের কথা কে ভেবেছে??সবাই জনগণকে সিড়ি বানিয়ে ক্ষমতার আসনে আরোহণ করতে চেয়েছে।এরাই আজও আমাদের শোষণ করছে।শুধু চরিত্রগুলো সময়ের সাথে বদলেছে।জলপাইদের দল,নৌকা, ধানের শীষ। এখন এসেছে জিহাদী জঙ্গী,তাদের সাথে আছে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি।কিন্তু কেউ কি জানতে চেয়েছে সাধারণ কি চায়??

আমরা, আমাদের বাবা-ভাইয়েরা কি এই উদ্দেশ্যেই রক্ত দিয়েছিল ৭১ এ??নাকি মা-বোনেরা অত্যাচারিত হয়েছিল এই ভবিষ্যত চেয়ে??

স্বাধীনতা মিলে গেলেও, পাওয়া যায় নি এর স্বাদ।আজও জুটেনি মুক্তি।এই মুক্তির জন্য চাই বিপ্লব।বিপ্লবের কোন বিকল্প নেই।বিপ্লব মানেই রক্তপাত না।বিপ্লব মানেই অস্ত্রহাতে ঝাঁপিয়ে পড়া না।সময়ের সাথে বিপ্লবের উদ্দেশ্য বদলায় নি।তবে বদলাতে হবে এর কৌশল।বিপ্লব অনেক ভাবেই আসতে পারে।কৃষি বিপ্লব,শিল্প বিপ্লব, প্রযুক্তির বিপ্লব, রাজনৈতিক বিপ্লব, ভোটের বিপ্লব।সবকিছুর সুষ্ঠু সমন্বয়েই সম্ভব সত্যিকারের মুক্তি।

কিন্তু কোথায় সে কাণ্ডারি??কাণ্ডারি আসছে বলে।অপেক্ষায় না থেকে খুঁজে বেড় করুন।

জয় বিপ্লবের জয়।

বুধবার, ২ মার্চ, ২০১১

প্রাণের পতাকা...

সারা বাংলাদেশ পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলন জোয়ারে ভাসছে। সবাই স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নে বিভোর। এত সব ঢেউয়ের মাঝে বড় বড় ঢেউগুলো ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আর তা বাকিসব ঢেউ নিয়ে আছড়ে পরছিল ধানমণ্ডি ৩২ এ নেতার বাড়িতে। ২রা মার্চ, ১৯৭১ ডাকসু র ভিপি আ স ম আব্দুর রব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের প্রাণের পতাকা উত্তোলন করেন। সেই নিশান একে একে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়লো। এই পতাকা হয়ে গেল আমাদের প্রাণের পতাকা। এই পতাকা নিয়েই আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। পাকিদের নাস্তানবুদ করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছি।

এই পতাকার নকশা করেছেন শিব নারায়ণ দাশ। পতাকার সবুজ আমাদের দেশের সবুজ-শ্যামলের প্রতিনিধিত্ব করে। মাঝে লাল বৃত্ত যা প্রকাশ করে মুক্তিকামী মানুষের বুকের তাজা রক্ত। এই রক্ত তিতুমীরের, এই রক্ত সূর্যসেনের, এই রক্ত প্রীতিলতার, এই রক্ত ক্ষুদিরামের, এই রক্ত ভাষা শহীদদের, এই রক্ত নাম জানা-অজানা লাখো শহীদের যারা ধাপে ধাপে এই বাংলার মুক্তির সংগ্রামে রক্ত দিয়েছেন। আর রক্তাক লালের মাঝে বাংলার উদীয়মান সোনালি মানচিত্র। পরে এই পতাকাকে অর্জণ করতে রক্ত দিয়েছে ত্রিশ লাখ শহীদ।

২রা মার্চ আমাদের পতাকার জন্য একটা বিশেষ দিন হলেও এর জন্ম আরো আগেই। ১৯৭০ সালের ৭ জুন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকার পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত ছাত্রদের এক সামরিক কুচকাওয়াজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অংশ গ্রহণের কথা ছিল। এই লক্ষ্যে ছাত্রদের নিয়ে জয়বাংলা বাহিনী গঠন করা হয়। ছাত্র নেতারা এই বাহিনীর একটি পতাকা তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় ।

এই লক্ষ্যে ১৯৭০ সালের ৬ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের (তৎকালীন ইকবাল হল) ১১৬ নং কক্ষে ছাত্রলীগ নেতা আ স ম আবদুর রব, শাহজাহান সিরাজ, কাজী আরেফ আহমদ, মার্শাল মনিরুল ইসলাম পতাকার পরিকল্পনা নিয়ে বৈঠকে বসেন। এ বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগ নেতা স্বপন কুমার চৌধুরী, জগন্নাথ কলেজের ছাত্রলীগ নেতা নজরুল ইসলাম, কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা শিব নারায়ণ দাশ, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সাধারণ সাধারণ সম্পাদক হাসানুল হক ইনু ও ছাত্রনেতা ইউসুফ সালাউদ্দিন।

সভায় কাজী আরেফের প্রাথমিক প্রস্তাবনার উপর ভিত্তি করে সবার আলোচনার শেষে সবুজ জমিনের উপর লাল সূর্যের মাঝে সোনালি হলুদ রঙের বাংলার মানচিত্র খচিত পতাকা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। ১৯৭০ সালের ৬ জুন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের ৪০১ নং (উত্তর) কক্ষে রাত এগারটার পর পুরো পতাকার ডিজাইন সম্পন্ন করেন শিব নারায়ণ দাশ।

সেই রাতেই নিউমার্কেট এলাকার বলাকা বিল্ডিংয়ের ৩ তলার ছাত্রলীগ অফিসের পাশে নিউ পাক ফ্যাশন টেইলার্সের টেইলার্স মাস্টার খালেক মোহাম্মদী পতাকার নকশা বুঝে কাজ শুরু করেন। তারা ভোরের মধ্যেই কয়েকটি পতাকা তৈরি করে দেন।

আমাদের আদি পতাকা



আমাদের এই প্রাণের পতাকা উত্তোলনের জন্য কিছু বিখ্যাত দিন হলঃ

জুন ৭, ১৯৭০
৭ জুন ১৯৭০ এ অনুষ্ঠিত কুচকাওয়াজের নেতৃত্ব প্রদান করেন আ স ম আবদুর রব। অল্প পেছনে পতাকা হাতে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন হাসানুল হক ইনু। রব সেই পতাকা বঙ্গবন্ধুর হাতে তুলে দেন এবং শেখ মুজিবুর রহমান সেই পতাকা ছাত্র-জনতার সামনে তুলে ধরেন। এরপর ইনু পতাকাটি তার কক্ষে নিয়ে যান এবং সহপাঠি শরীফ নুরুল আম্বিয়া শেরে বাংলা হলের ৪০৪ কক্ষের খবিরুজ্জামানকে পতাকাটি বাক্সে লুকিয়ে রাখতে বলেন। এরপর একাত্তরের শুরুতে নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ জাহিদ হোসেন পতাকাটি নিয়ে যান তার মালিবাগের বাসায়।

মার্চ ২, ১৯৭১
১৯৭১ এর ১ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত হবার পর ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় এক বিশাল সমাবেশ হয়। এ সমাবেশে আ স ম আবদুর রব যখন বক্তৃতা করছিলেন, তখন নগর ছাত্রলীগ নেতা শেখ জাহিদ হোসেন একটি বাঁশের মাথায় পতাকা বেঁধে রোকেয়া হলের দিক থেকে মঞ্চস্থলে মিছিল নিয়ে এগিয়ে আসেন। রব তখন সেই পতাকা তুলে ধরেন।

মার্চ ২৩, ১৯৭১
১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবসে সারা বাংলায় পাকিস্তানের পতকার পরিবর্তে শিব নারায়ণ দাশের নকশা করা পতাকা উত্তোলিত হয়।

৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে বিজয় লাভ করার পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকার কোন এক রহস্যময় কারণে [যদিও বলা হয়ে থাকে নকশাকা সহজ করার জন্য] পতাকা থেকে মানচিত্র বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এবং এই কাজটির দ্বায়িত্ব পান পটুয়া কামরুল হাসান। তার হাত ধরেই নব-নকশায় তৈরি হয় আমাদের বর্তমান জাতীয় পতাকা।

আমাদের বর্তমান পতাকা



তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া