বুধবার, ১৫ জুন, ২০১১

নারী নির্যাতন আর কিছু কথা - যা না বললেই নয়...



সারা বিশ্বের কথা বাদ দেই, শুধু এই বাংলার কথাই বলি। এই বাংলার অন্তত অর্ধেক ঘরে নারী নির্যাতন হয়। আমরা দেখতে চেষ্টা করি না। কারণ ওরা সখিনা, মর্জিনা, কিংবা সালেহা, রাহেলা। ওদের নিয়ে ভাববার সময় কোথায়?? কিন্তু আমাদের ঢাবির শিক্ষিকা রুমানা মঞ্জুরের উপর অত্যাচারের কথা শুনে আমরা ঠিকই আঁতকে উঠি। আঁতকে ওঠার মতনই। কিন্তু আমাদের বিবেক রাহেলা-সালেহাদের জন্য না কেঁদে শুধু রুমানা মঞ্জুরদের জন্যই কাঁদে। কারণ উনি ঢাবির শিক্ষিকা। এই একচোখামি সারা দেশ জুড়েই চলছে।

কোন কোন নারী মানবাধিকারের কর্মী সেমিনারে বসে বড় বড় বুলি আওড়ায়, নারী মুক্তির আন্দোলন করে। আবার বাসায় গিয়ে ছেলের বউকে নির্যাতন করে, ছেলেকে বউ পেটাতে উসকে দেয়। কোন কোন পুরুষ পত্রিকা, টেলিভিশন কিংবা সেমিনারে নারীবাদী কথা বলে বাহবা পায়। অথচ ঘরে ফিরে বউ পেটা্য, হয়তোবা বউয়ের দোষঃ তরকারিতে নুন কম হওয়া। এইসব বর্ণচোরার কোন অভাব নেই। বরং এদের সংখ্যাই বেশি।

দেশে দুই নারী মিলে সাড়ে ১৭ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী। কই তারা তো একটা নারী-নীতিই চালু করতে পারলো না!! এক্ষেত্রে বাঁধা নাকি কোরান-হাদীস। কোরান-হাদীসে আরো কত কথাই লেখা আছে সেগুলা নিয়া তো তাদের মাথাব্যথা নাই। কোরান-হাদীসে নারীদের ভাগ কম দেওয়াকে অনেক শিক্ষিত পুরুষই কোরাণ না মানলেও এইবেলা মেনে নেন, কারণ এতে যে তারই স্বার্থ আছে। এদেরকে একবার বুকে হাত দিয়ে বলতে বলেন যে কোরানে যদি বলা হত পুরুষেরা নারীর অর্ধেক সম্পত্তি পাবে তবে মানতো কিনা। এইবেলা কবি অবশ্যই নীরব থাকবেন।

নারী নির্যাতনের যতগুলো কারণ আছে তার শুরুতেই থাকবে যৌতুক আর পরকীয়া। যারা কোরান-হাদীসের কথা বলে নারী-নীতির বিরোধীতা করেন তারা কি বলতে পারবেন যে কোরান-হাদীসের কোন আয়াতে যৌতুকের কথা বলা হয়েছে?? প্রয়োজনে একটু পড়াশোনা করেই নাহয় উত্তর দিন। এইবার আসি পরকীয়ার কথায়। অনেকেই (বিশেষ করে তথাকথিত নারীবাদিরা) বোঝাতে চান যে এই পরকীয়া শুধু পুরুষেরাই করে থাকেন। বড়ই হাস্যকর। নারীরাও যে এই ব্যাপারে খুব একটা পিছিয়ে নেই সেটা স্বীকার না করলেই বক্তাদের অন্ধ না বলে পারছি না।

শুধু একজন রুমানা না, সকল নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। তবে এখানে পুরুষদের করার মতন বিশেষ কিছু নেই। নারীদের এই লড়াইতে তাদের নিজেদেরকেই লড়তে হবে। নিজেদের লড়াই নিজেরা করলেই তাতে প্রাণ থাকে, অন্য করলে তার আর দাম থাকে না।

পোস্টটা এখানেই শেষ করলে হয়তো ভালো হত, কিন্তু তাতে যে লেখাটা অসম্পূর্ণ থেকে যায়।

পুরুষেরা গায়ে হাত তোলেন। আর নারীরা কী করেন?? ঘরে ঘরে যে নারীরা পুরুষদের উপর মানসিক অত্যাচার করেন তার কোন হিসেব নেই। হিসেব করলে একটা ভয়ংকর তথ্যই পাওয়া যাবে।

এই ব্লগে অনেক বিবাহিত পুরুষ ব্লগার আছেন। তারা একবার চিন্তা করে দেখেন তো আপনি আপনার স্ত্রীর কাছে মানসিক অত্যাচারের স্বীকার কিনা!! হয়তো লজ্জাই অনেকেই স্বীকার করবেন না। তবে লজ্জা ভাঙ্গার সময় চলে এসেছে। আর বিবাহিত নারী ব্লগাররা একটু ভেবে দেখেন তো আপনার স্বামীর সাথে যা যা করেন তা ঠিক করেন কিনা আর তাকে মানসিকভাবে কতটা ভালো থাকতে দিচ্ছেন।

ঘরে ঘরে নারী নির্যাতনটা বন্ধ হওয়া খুব জরুরী। এর সাথে নারীদের পুরুষদের উপর মানসিক অত্যচারটাও বন্ধ হওয়া দরকার।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন