বাংলাদেশের নুনু...
পুরুষ মানুষের যৌনাঙ্গের অনেক নাম। লিঙ্গ, শিশ্ন, পুরুষাঙ্গ হল পুঁথিগত
নাম। অশালীনভাবে একে বলে বাড়া, ডাণ্ডা, লেওড়া। আর এর দুইয়ের মাঝে সামঞ্জস্য
করে বলা হয় সোনা, ধন। তবে নুনু শব্দটা বহুল প্রচলিত। পুরুষ মানুষের নুনু
থাকে। আবার বৃহণ্নলাদেরও নুনু থাকে। তবে পুরুষের নুনু কাজের কাজ করতে
পারলেও বৃহণ্ণলার নুনু পারে না।
সাধারণত পুরুষ প্রজাতির প্রাণীদের নুনু থাকলেও বর্তমানকালে রাষ্ট্রেরও নুনু
থাকে। কোন কোন দেশের নুনু কাজের, আবার কোন কোন দেশের নুনু কাজের না। ১৯৪৭ এ
যখন পাকিস্তানের জন্ম হয় তখন বলা হয়েছিল আর যাইহোক পাকিস্তানের নুনুতে হাত
দেওয়া হবে না। কারণ পাকিস্তান শুধুমাত্র মুসলমানদের দেশ হবে না, এখানে
সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, কাদিয়ানীদের জায়গা হবে। এই ভরসায়
বাংলার ছুডলোক হিন্দুরা জিন্নাহ সাবরে সমর্থণ দিলো। পাকিস্তান হল। ছুডলোক
হিন্দুদের নেতা যোগেন বাবু মন্ত্রী হলেন। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতে
বুঝতেই পারলেন পাকিস্তানের নুনুটা একটু বড় হইছে, একে হাফ-হাতা বানানোর সময়
এসে গেছে। রাতের অন্ধকারে ভারতে হলেন পগার পার। শালার মালু সময়মত ঠিকই আসল
দেশে দৌড় দিলো!!
পাকিস্তান রাষ্ট্রের মুণ্ডিখোলা নুনুর সুরসুরিতে মালুরা বেশিদিন টিকতে
পারলো না। দলে দলে সব ভারত রওনা দিলো। পিপীলিকার মতন পিলপিল করে এগিয়ে চললো
নিজ দেশের মাটিতে। পাকিস্তান সত্যিকারের মুসলিম রাষ্ট্র হয়ে উঠতে লাগলো।
কিন্তু তাতে বাধ সাধলো গোপালগঞ্জের মালুরা, আর তাদের নেতা মুজিব সাব। তিনি
দেখলেন এই নুনুর চুলকানি চলতে থাকলে পাকিস্তান ধর্মের নামে ব্যর্থ রাষ্ট্রে
পরিণত হতে চলছে। কারণ পশ্চিমা পাকিরা ভাবে পূর্বের পাকি মুসলিমরা আসলে
মুসলমান না, তাদের নুনু ঠিকমত কাটা না! ধনের জোর কম!!
চুলকানি মুক্ত দেশ গড়ার জন্য শেখ সাবের নেতৃত্বে আর মালুদেশ ইন্ডিয়ার
ইন্ধনে বাঙালি পাকিগো পিটাতে নামলো লগি-বৈঠা নিয়া। ওরা শেখ সাবরে ধরে নিয়ে
গেল। তাতে কী!! মালুরা মালুভাইদের কাছ থেকে ট্রেনিং নিয়া নেমে পড়লো আসল
মুসলিমদের সাফা করতে। সব সাফা করতে হল না, তার আগেই পাকিরা পায়ে ধরে মাফ
চাইলো।
দেশ স্বাধীন হল। নতুন দেশের নতুন নুনু, কোন চুলকানি না। শেখ সাব দেশে ফিরলে
নতুন সংবিধান লেখা হল। এটা নিশ্চিত করা হল আর যাই হোক বাংলাদেশের নুনু
নিয়ে কোন টানহ্যাঁচড়া চলবে না। যার যার নুনু সে তার ইচ্ছে মত চুলকাতে
পারলেও কাউকে দেশের নুনু চুলকানোর সুযোগ দেওয়া হবে না। এই ফাঁকে নুনু
চুলকানোর মানুষেরা দলে দলে কপালে সিঁদূর দিয়ে মালু সাজতে লাগলো কিন্তু তলে
তলে নুনুর চুলকানি ঠিকই থাকলো। সব চুলকানির জন্য শান্তির পরশ হয়ে এল
মামুরা। তারা শেখ সাব আর তার পুরো পরিবারকে সাফা করে দিলো। রেডিও বাংলাদেশে
আবারো গর্জণ করে বলা হলঃ পাকিস্তান জিন্দাবাদ থুক্কু বাংলাদেশ জিন্দাবাদ!
এরপর চললো মামুদের ক্ষমতা দখলের নাটক। জিয়া-খালেদ হয়ে আবারো জিয়ার হাতে
ফিরলো তাহের মামুর কল্যাণে। তাহের মামু সমাজতান্ত্রিক দেশ চেয়েছিলেন, ধর্ম
নিরপেক্ষ দেশ চেয়েছিলেন। তার প্রমাণ মিলে তার নেতৃত্বে এগিয়ে জিয়াকে
সিপাহী-জনতার শ্লোগানে!! সবাই শ্লোগান দিলোঃ
নারায়ে তাক্বীর!
আল্লাহু একবার!!
বাংলাদেশ জিন্দাবাদ!!
জিয়া সাব ক্ষমতায় আসতে না আসতেই হিরো তাহের মামুকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে জিরো
বানিয়ে দিলেন। যেসব সাচ্চা মুসলমান কপালে আবির দিয়ে মালু সেজেছিল তারা আগের
রূপে ফিরে এল। পাকি দেশে পালিয়ে থাকা সাচ্চা মুসলমান বাঙালিরা দেশে ফিরে
আসতে লাগলো। সবাই মিলে জিয়া মামুর নেতৃত্বে দেশের নুনু কাটার ব্যবস্থা
করলেন। শিশুদেশের কচি নুনুর মাথার খোলসটা সহি ইসলামিক কায়দায় কেটে ফেলা হল।
মুণ্ডিটা সুন্দর দেখা যেত লাগলো। এই না হলে ইসলামি দেশ।
কিন্তু জিয়া সাব সুন্নতে খৎনার উৎসবটা ঠিকমত করতে পারলেন না। মঞ্জু মামু
জিয়া মামুকে সরিয়ে দিলেন, গদি থেকে না, সোজা দুনিয়া থেকে। আর মঞ্জু মামুর
ঘাড়ে বন্দুক রেখে এগিয়ে এলেন এরশাদ মামু। আবারো একই কাণ্ড! এরশাদ মামু হিরো
মঞ্জু মামুকে হিরো থেকে জিরো করে দিলেন দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিয়ে। জিয়া মামু
সুন্নতে খৎনার অনুষ্ঠান করে যেতে পারেন নি, এরশাদ মামু সেই উৎসবটাই করলেন
মহাধুমধামে।
এরশাদ মামু সুন্নতে খৎনার উৎসব করে নিজেকে সাচ্চা মুসলমান হিসেবে প্রমাণ
করলেও খ্রিস্টান সংস্কৃতি ঠিকই আমদানি করলেন। চাতরদের রক্তের দাগ মুছিয়ে
দিতে দেশে এলো 'ভালোবাসা দিবস'...খ্রিস্টান কায়দা কানুন যতই আসুক মামু
আটরশি পীরের বাড়িতে গিয়ে সব গুণাহর দায় মুছে ফেলেছেন। কিন্তু একসময় এরশাদ
মামুও টিকতে পারলেন না। ক্ষমতা থেকে সরে গেলেন। দেশে গণতন্ত্র এলো। কিন্তু
এরশাদ মামু দুইনেত্রীর ঘাড়ে বসেই রুটি-হালুয়া খেতে লাগলেন। খালেদা
ম্যাডামের কাছে কেউ নুনু নিয়ে কথা বলার সাহস পেলেন না। যদিওবা মালু
সুরঞ্জিত একবার ছোট্ট একটা কথা তুলেছিল কী প্রসঙ্গে, সাকা সাব তাকে চুপ
করিয়ে দিলেন। ফুল হাতারা কেন কথা বলবে।
যাইই ঘটে চলুক না কেন দেশের একটা অংশ স্বপ্নে বিভোর যে, দেশের নুনু আবার
আগের জায়গায় ফিরে যাবে। সবাই নৌকায় ভোট দিলেন, হয়তো এবার হাসিনা আপা
পারবেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হল না। কাটা নুনু কাটাই থাকলো। কারণ সেটা
করা সম্ভব না। ফুলহাতা নুনুকে সুন্নতে খৎনা দিয়ে হাফহাতা করা যায়। কিন্তু
হাফহাতা নুনুকে কি আর ফুলহাতা করা যায়!!
বাংলাদেশ এখন সাচ্চা মুসলমান রাষ্ট্র। বাংলাদেশ এখন হ্বজ করে, রোজা রাখে, নামাজ পড়ে। সবাই তাই দলে দলে বলুনঃ
নারায়ে তাক্বীর!
আল্লাহু একবার!!
বাংলাদেশ জিন্দাবাদ!!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন