শুক্রবার, ১ জুলাই, ২০১১

সব নষ্টদের দখলে!! — এই বলেই কি নিজেদের মিছে সান্ত্বনা দিবো??

আমাদের দেশের বেলায় সবচেয়ে প্রযোজ্য কথা হল -

অদ্ভুত উটের দেশে চলছে দেশ এক!!


দেশের সর্বত্র চলছে নষ্টদের রাজত্ব। একজন লোককে পশুর মতন জবাই করা কোন ব্যাপার না আজ। ধর্মের নামে এক শিশুকে/নারীকে বেত/পাথর ছুড়ে মারার ঘটনাও ঘটে চলছে। দেশের প্রতিকোণায় রাহেলা-সালেহা-জরিনা-পূর্ণিমারা তো অত্যাচারিতই, ঢাবির শিক্ষিকাও আজ নির্যাতিত। সীমা চৌধুরী কিংবা ইয়াসমীনেরা রক্ষক পুলিশের হাতেই ধর্ষিতা হন। ন্যায়ের প্রতীক র‍্যাব ভাইয়েরাই কোন কারণ ছাড়াই লিমনকে করেছে পঙ্গু। দেশের রক্ষক সেনা তারাও দেশের পাহাড়িদের দমন করে। সেখানেও চলে মানুষ হত্যা, নারী শিকারের মতন ঘটনা।

আমাদের বর্তমান সরকার, এর আগের সরকারেরা মিলে তামশা খেলছেন। তাদের খেয়াল-খুশি মতন দেশের সর্বোচ্চ দলিল নিয়ে কাটা-ছেঁড়ার খেলায় মেতে উঠছেন। রাষ্ট্রেরও নাকি ধর্ম থাকে!! সংবিধানে অবশ্যই এটা লেখা থাকতে পারে যে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলমান। তাই বলে রাষ্ট্রও কি মুসলামান নাকি?? রাষ্ট্রের কি সুন্নতে খৎনা হয়েছে?? রাষ্ট্র কি নামজ পড়ে, হজ্জ্ব করে?? নাকি ধর্ম আজ খেলনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে??

রাষ্ট্র একইসাথে ধর্ম নিরপেক্ষ থাকবে কিন্তু সকল কাজ শুরু করবে পরম করূণাময় আল্লাহর নামে। এটা কীভাবে সম্ভব??

এই নতুন সংশোধনীতে আদিবাসী ও ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আবার এর সাথে এও বলা হয়েছে রাষ্ট্রের সকলের জাতীয়তা বাঙালি, দেশীয় পরিচয় হিসবে বাংলাদেশি লেখা হবে। এটা কীভাবে সম্ভব??

বিএনপির আমলে বড়পুকুরিয়ায় যখন সকলে আন্দোলনে ব্যস্ত, কেউ উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা খনন করতে দিবেন না, তখন এই লীগই তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল। আজ তারাই এশিয়া এনার্জিকে কাজ পাইয়ে দিতে বদ্ধ-পরিপক। দেশের গ্যাস বাইরে চালান করার জন্য একটা চুক্তি হয়েছে। সরকারের দাবি দেশের স্বার্থ নিশ্চিত করা হয়েছে। যদি তাইই করা হয় তবে সেই চুক্তি প্রকাশ করা যাবে না কেন??

ট্রানজিটের মুলো ঝুললো আমাদের নাকের ডগায়। আমাদের নাকি বছরে ৭০০০ কোটি টাকা আয় হবে। আর এখন তো দেখা যাচ্ছে ৭০০০ কোটি পয়সা হবারও সম্ভাবনা নাই। তাহলে এত টাকা ঋণ নেওয়া হল কার স্বার্থে??

এরকম আরো কত কী আছে তা বলে শেষ করা সম্ভব না। একেবারে মাথায় যতটুকু আসলো তাই লিখলাম।

আমরা দেখি, কষ্ট পাই। নিজেদের মাঝে কষ্ট পাওয়ার ব্যাপারটা আদান-প্রদান করি। ব্লগে পোস্ট দেই। ব্লগীয় প্রতিবাদ করি। ছড়া-কবিতা লেখি। নিজেদের মাঝে তর্ক-বিতর্কও করি। কারণ আমাদের দৌড় বোধহয় এতটুকুই। আর সর্বোচ্চ ব্যাপার হল - এটা প্রকাশ করা যে সব নষ্টদের দখলে চলে গেছে। এটা শুধু একজন মানুষের কথা না। হতাশা থেকে অনেকেই এই কথা বলেন। কখনো কখনো আমি নিজেও বলি। এই বলে আমরা এড়িয়ে যাই কিংবা নিজেদের অপারগতায় নিজেকেই মিছে সান্ত্বনা দেই। একটা ঘটনার কিছুদিন পরেই সব ভুলে যাই কিংবা সেই কষ্টটা মনের এক কোণায় লুকিয়ে পরে। নতুন কোন ঘটনার অপেক্ষায় থাকি। নতুন করে কষ্ট করি, কষ্ট পাওয়ার ব্যাপারটাকে প্রকাশ করি কিংবা নীরবে সয়ে যাই। এভাবেই দিন চলে যাচ্ছে। সব কিছু আরো বেশি করে নষ্টদের দখলে চলে যাচ্ছে।

এভাবে সব নষ্টদের দখলে চলে গিয়েছে বলে নিজেদের আর কত মিছে সান্ত্বনা দিবো?? এভাবেই নিজেরা নিজেদের রক্ষা করছি না বরং শেষ করে দিচ্ছি একটু একটু করে।কিন্ত্য আর কত??

চলেন রাস্তায় না্মি, বাঙালি জাতিকে এইসব দোষ থেকে দায়মুক্ত করতে যুদ্ধে নামি। এতে হয়তো আমি মরবো, আপনি মরবেন, আমার বাবা-মা সন্তান হারা হবে, আপনার বাবা-মাও হবে। আমার ছেলে-মেয়ে পিতৃহারা হবে, আপনার ছেলে-মেয়েও হবে। কিন্তু তাতে তো দেশের কোটি সন্তানের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত হবে। কারো দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না। আমাদের মাঝেই একজন শেখ মুজিব, একজন তাজউদ্দিন, একজন মতিউর রহমান, একজন রুহুল আমীন, একজন আসাদ, একজন নূর হোসেন লুকিয়ে আছে। একে বেড় করে আনতে হবে। করতে হবে নিজেদের বাঁচাতে, দেশকে বাঁচাতে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করতে।