বুধবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

অকৃত্রিম বন্ধু ভারত - ০১ : নদ-নদী - ০১ : ভারতের তিস্তা-মহানন্দা শোষণ

আমাদের দেশের সকল রাজনৈতিক দলই কম-বেশি ভারতকে খুশি রাখার চেষ্টা করে নিজের মসনদ টিকিয়ে রাখার জন্য। কারণ ভারত হল আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু; তাদের খুশি না রেখে কি টেকা যায়। কো দল সরাসরি তা স্বীকার করে নেয় আর কোন দল তা মুখে স্বীকার না করলেও তা-ই করে। এটা ভারতের যতটা দোষ ঠিক ততটাই দোষ আমাদের। এ দুনিয়ায় কোন মানুষ কিংবা দেশ কেউ/কোনটাই তাদের স্বার্থ বিসর্জণ দিয়ে আমাদের সাহায্য করবে না। এক্ষেত্রে আমাদেরই ব্যর্থতা যে আমরা আমাদের দাবি আদায় করতে পারিনি; এমনকি অনেকসময় চুপ করে থেকেছি। তারপরও যত বড়ই দেশ হোক না কেন প্রতিবেশী দেশ হিসেবে দাদাগিরি ছাড়াও ভারতের কর্তব্য রয়েছে যা দু-দেশের মাঝে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটাবে। কিন্তু তারা খুব একটা আগ্রহী না।

আমাদের দেশ হয়তো একটা সময়ে ব্যাপাক লবণাক্ততায় ভুগবে এবং তাই অকৃত্রিম বন্ধুরাষ্ট্রটার জন্যই। তারা বিভিন্ন আন্তঃদেশীয় নদীতে বাঁধ দিয়ে এক চেটিয়া ভাবে পানি সরিয়ে নিচ্ছে। তারা তাদের দরকার মেটাচ্ছে কিন্তু তা আমাদের দরকার ও আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাকে তোয়াক্কা না করেই।

বাংলাদেশ মূলত সমভূমি-দেশ। তাই এখানে উৎপন্ন নদী সংখ্যা প্রায় শূন্যা। ভারত ও মায়ানমার থেকেই নদীর আগমন ঘটেছে। বাংলাদেশ-ভারতের মাঝে বেশ কয়েকটি আন্তঃদেশীয় নদী রয়েছে যা থেকে ভারত এক চেটিয়া ভাবেই পানি সরিয়ে নিচ্ছে।

আজকে দেখবো তিস্তা সহ উত্তরাঞ্চলের কিছু নদীর চিত্র। কোন গবেষণা করছি না কারণ আমি এই ব্যাপারে দক্ষ নই। তবে আমার সাধারণ জ্ঞান দিয়ে আর গুগুল আর্থ, উইকি আর কিছু ওয়েবসাইটের সহায়তায় কিছু একটা ঠিকই দাঁড় করানো যাচ্ছে। আর আশাকরি আপনাদের আলোচনা থেকে বাকিটা জানতে পারবো।

দুই বাংলার উত্তরের নদীগুলো দেখে নিন।


আজকের আলোচনা তিস্তা আর মহানন্দা নিয়ে।

তিস্তা:
সিকিমে হিমালয়ের ৭,২০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত চিতামু হ্রদ থেকে এই নদীটি সৃষ্টি হয়েছে। এটি দার্জিলিং -এ অবস্থিত শিভক গোলা নামে পরিচিত একটি গিরিসঙ্কটের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। দার্জিলিং পাহাড়ে তিস্তা একটি বন্য নদী এবং এর উপত্যকা ঘনবনে আচ্ছাদিত। পার্বত্য এলাকায় এর নিষ্পাশন এলাকার পরিমাণ মাত্র ১২,৫০০ বর্গ কিলোমিটার। পার্বত্য এলাকা থেকে প্রথমে প্রবাহটি দার্জিলিং সমভূমিতে নেমে আসে এবং পরে পশ্চিমবঙ্গের (ভারত) দুয়ার সমভূমিতে প্রবেশ করে। নদীটি নিলফামারী জেলার খড়িবাড়ি সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

অষ্টাদশ শতকের প্রায় শেষ পর্যন্ত এই ধারাটি বিভিন্ন নদীপ্রবাহের মাধ্যমে গঙ্গা নদীতে প্রবাহিত হতো। ১৭৮৭ সালের অতিবৃষ্টি একটি ব্যাপক বন্যার সৃষ্টি করেছিল এবং সেই সময় নদীটি গতিপথ পরিবর্তন করে লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম এবং গাইবান্ধা জেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়ে চিলমারী নদীবন্দরের দক্ষিণে ব্রহ্মপুত্র নদে পতিত হয়। তিস্তা নদীর সর্বমোট দৈর্ঘ্য ৩১৫ কিমি, তার মধ্যে ১১৫ কিমি বাংলাদেশ ভূখণ্ডে অবস্থিত।

তিস্তার মাসিক গড় পানি অপসারণের পরিমাণ ২,৪৩০ কিউমেক। তিস্তা একসময় করতোয়া নদীর মাধ্যমে গঙ্গার সঙ্গে সংযুক্ত ছিল এবং এর অংশবিশেষ এখনও বুড়ি তিস্তা নামে পরিচিত।


বর্তমান গুগল আর্থ দিয়ে শুধুমাত্র ২০১০ সাল পর্যন্ত ছবি পাওয়া যায় এবং তাও অসম্পূর্ণ। তারপরও একটু খেয়াল করুন।

ভারত ও বাংলাদেশে তিস্তা:




তিস্তার পথে বাধা-বিপত্তি:



তিস্তা ড্যাম:



তিস্তা ড্যাম হতে পানি সরিয়ে মহানন্দা ড্যামে আনা হচ্ছে:



বাংলাদেশ তিস্তা হতে এমনিতেই যথেষ্ট পানি পাচ্ছে না। বাংলাদেশের উত্তর বঙ্গের কৃষি বাঁচাতে তৈরী তিস্তা ড্যাম কোন কাজেই লাগছে না। কারণ ভারত পানি সরিয়ে নিচ্ছে। তারপর ভারত তিস্তায় সিরিজ বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ তৈরির প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তাতে করে আমাদের পানি পাবার শেষ আসাটুকুও হয়তো শেষ হয়ে আসবে।

India has proposed a series of dams within the Teesta river that should produce some 50,000 MW of electricity within the next 10 years.[6] With some of the largest sediment loads, the creation of a reservoir will lead to an increased pressure on an active fault area. There are concerns that the building of these dams may lead to river-induced seismicity. Despite such worries the construction of the dams had started.

তিস্তায় করা সিরিয়াল বাঁধের কিছু প্রকল্পঃ

Teesta Low Dam - III Project
Location: On river Teesta in Darjeeling dist. (W.B.)
Approach: Nearest Rail Head - New Jalpaiguri & ......
Capacity: (4x33) MW or 132 MW
Annual Generation: 594.07 MU (90% dependable year)
Project Cost: Rs.768.92 Crores (Net) (Dec 2002 price level)
Year of Commissioning/Completion Schedule: Feb 2011 (Anticipated)
TECHNICAL FEATURES
* 32.5 m high barrage
* 125x22x56 m surface power house
* 4 nos.kaplan turbine of 33 MW each

Teesta Low Dam - IV Project
Location: Kalijhora, darjeeling (W.B)
Approach: 25 Kms from Siliguri town.
Capacity: 160 MW (4x40 MW)
Annual Generation: 720 MUs ( 90% dependable year)
Project Cost: Rs.1061.38 Crores at March 2005 P.L.
Year of Commissioning/Completion Schedule: August 2011 (Anticipated)
TECHNICAL FEATURES
* 45 m high dam(above deepest Foundation level)/Roller Compacted Concrete Dam
* Surface Power House at Left Bank with 4 units of 40 mw each Kaplan turbine.
* Pressure Shaft: 4 Nos., 7m dia each,Circular shaped; steel lined

মহানন্দা:
মহানন্দারও জন্ম হিমালয়ে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলার চিমলির কাছে মহালদিরাম পর্বতের ২১০০ উচ্চতায় এর জন্ম।এটি শিলিগুঁড়ির কাছে সমতলে আসে এবং জলপাইগুঁড়ি জেলায় পৌঁছে।

এটি বাংলাদেশের সর্ব-উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় প্রবেশ করে। প্রায় ৩ কিমি জুড়ে বাংলাদেশ-ভারত সীমানা চিনহিত করে ভারতেই ভেরত যায়। এটি পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর থেকে বিহারের কিষাঙ্গঞ্জ হয়ে পশিমবঙ্গের মালদা জেলায় ফিরে আসে। এর পশ্চিমাংশে গড়ে ওঠে অনুর্বর গড় এলাকা আর পূর্বাংশে গড়ে ওঠে বরেন্দ্রভূমি। এটি বাংলাদেশের চাঁপাইগঞ্জের কাছে গোদাগরিতে গঙ্গার সাথে মিলিত হয়।

মহান্দার দৈর্ঘ্য ৩৬০ কিমি যার মাত্র ৩৬ কিমি বাংলাদেশে।

বাংলাদেশের বাংলাবান্ধা সীমান্তের নিকটে বাঁধ দিয়ে সীমান্ত নদী মহানন্দার পানি সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এই ড্যামে তিস্তার বিকল্প পথের পানি এসেও মিশছে:






সরিয়ে নেওয়া পানির বিকল্প পথ বাংলাদেশের সীমান্তের সমান্তরালে চলছে:




শুকনো মহানন্দা বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত ছেড়ে ভারতে প্রবেশ করা মাত্রই মহানন্দার পানি ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে:




1 টি মন্তব্য:

  1. গঙ্গা খুব সম্ভবত সপ্তদশ শতক থেকে পূর্ব দিকে সরে যেতে থাকে। পাকি আমলে তৈরি ফারাক্কা বাঁধ তৈরি করে হুগলি নদীকে যেমন ভারত বাঁচিয়েছে, একই ভাবে গঙ্গার বাংলাদেশ প্রবেশকেও আটকে দিয়েছে।

    উত্তরমুছুন