টিকটিকির লেজ সাংঘাতিক এক জিনিস। টিকটিকির
লেজ খেয়ে কেউ মরে না, নেশায় চূড় হয়ে আধমরা হয়ে পড়ে থাকে। কোন হুঁশ থাকে
না। মাঝে মধ্যে দু-এক বার হাত উঠিয়ে কিছু বললেও আবার ঘুমের রাজ্যে পৃথিবী
কাব্যময় হয়ে ওঠে। দু'দিন না কাটলে এই ঘুম আর যাবার নয়, সব ভোলা যায় এক নিমিষেই।
আজ ৩ রা জুন। বছর দুই আগে এইদিনেই ঘটেছিল নিমতলী ট্র্যাজেডি। বেশি না, মাত্র দু'শ মানুষ পুড়েছিল আগুণে। দু'শ সংখ্যা আর বেশি না, ক'দিন আগে রানা প্লাজায় হাজার লাশ দেখে ফেলেছি। গোটা জাতি টিকটিকির ল্যাজ খেয়ে ঝিমোচ্ছে, নিমতলী ট্র্যাজেডি মনে রাখবার ফুরসাৎ কই! মনে থাকলে তো বিচারের বাণী একা একা কাঁদতো না, কেমিক্যালের গোডাউন সরে যেত। কিন্তু ঐ যে টিকটিকির ল্যাজ আছে না! সব ভুলে যাওয়ার মহৌষধ।
আমিও এক *দির ভাই, আমার কিচ্ছু করার খ্যামতা নাই। বইয়া বইয়া কাব্য মারি। এইবারের দৌড় সনেটেই শ্যাষ!
পোড়া লাশে স্বজনের বাস...
চেয়ে দ্যাখ্ পোড়া লোক, লাশ হয়ে রয়।
লাশটা আর একা না, শ' ছাড়িয়ে গ্যালো,
সত্যিই তো সব লাশ, নয় ড্রামা-ম্যালো!
ওরা হাতছানি দেয়। মনে লাগে ভয়?
আমার ভয় লাগে না, নিজের মানুষ।
আমি পোড়া লাশ শুঁকি, স্বজনের বাস!
কয়লা-কালি মেখেও টিকে রয় শ্বাস।
লাশ গুণে দিল-খুশ্! নাই রে কি হুঁশ?
দিন-মাস -সন গ্যালো, নেই পোড়া ছাই,
সব ভুলিয়ে দেয় রে নয়া লাশ এসে।
সরে ন কো কেমিক্যাল, কে সরাবে ভাই?
কেঁদে চলে জাজমেন্ট, আজব এ দেশে।
পুড়ছে নতুন লোক, যেন শেষ নাই!
আর কত জন ম'লে পৌঁছবে যে শেষে?
৩ মে, ২০১৩
দেবাশিস্ মুখার্জি
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন